সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: হাসপাতাল কর্মীদের একাংশ দালালচক্র চালাচ্ছেন! এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকদের। নিজের আত্মীর পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন নার্সিংহোম থেকে রোগীদের এখানে এনে দিনের পর দিন ভর্তি করাচ্ছেন হাসপাতাল কর্মীদের একাংশ। এতে হাসপাতালে আসা গরিব মানুষ চিকিৎসা পরিবেষবা পাওয়ার ক্ষেত্রে বঞ্চিত হচ্ছেন। অনেকেই বেড পাচ্ছেন না। মঙ্গলবার এই ব্যাপারে হাসপাতাল সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সহকারী অধ্যাপক নিউরো সার্জন ডাঃ সজল বিশ্বাস ও তাঁর সহ চিকিৎসকরা।
ডাঃ সজল বিশ্বাস বলেন, আমাদের হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে নিউরো সার্জারিতে বিভিন্ন নার্সিংহোমের রোগীই বেশি ভর্তি হচ্ছেন। মোটা টাকা খরচ করে নার্সিংহোমে অস্ত্রোপচার ও অন্যান্য চিকিৎসা করাতে গিয়ে যখন পরিবারের লোকেরা আর খরচ বহন করতে পারেন না তখন তাঁদেরকে এখানে এনে ভর্তি করা হচ্ছে। হাসপাতাল কর্মীদের একটি অংশ রোগীদের নিজের নিকট আত্মীয় পরিচয় দিয়ে ভর্তিতে তদ্বির করছেন। আসলে এঁরা দালালচক্র চালাচ্ছেন। তাঁরাই এই রোগীদের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ লাগোয়া নার্সিংহোমগুলিতে নিয়ে যান প্রথমে। আর্থিক লেনদেনের কারণে রোগীর পরিবারকে বিনামূল্যে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসার নিশ্চয়তা দিয়ে থাকেন বলে আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মেডিক্যালের নিউরো সার্জারি বিভাগে ডাঃ সজল বিশ্বাস ছাড়াও একজন আরএমও এবং একজন চুক্তিভিত্তিক চিকিৎসক রয়েছেন। চুক্তিভিত্তিক চিকিৎসক দিনে ছ’ঘণ্টা ও সপ্তাহে তিনদিনের বেশি কাজ করতে পারেন না। এই পরিস্থিতিতে নার্সিংহোমের রোগীদের ভিড়ে তাঁদের সকলকে বাড়তি চাপ বহন করতে হচ্ছে। ডাঃ বিশ্বাস আরও বলেন, সুপার জরুরি কাজে ব্যস্ত থাকায় এদিন তাঁর সঙ্গে এই ব্যাপারে আলোচনা করা যায়নি। পরে তাঁকে জানানো হবে।
এই ব্যাপারে হাসপাতাল সুপার ডাঃ সঞ্জয় মল্লিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এই ধরনের সমস্যা হয়ে থাকলে নিউরো সার্জারিতেও নার্সিংহোমের রোগী ভর্তির ক্ষেত্রে সিসিইউয়ের মতো নিয়মকানুন করতে হবে। সিসিইউতে বিভিন্ন নার্সিংহোম থেকে রোগী এনে ভর্তি করা হলে আগে লিখিত আবেদন জানাতে হয়। রোগীর অবস্থা ও বেড খালি থাকার উপর বিবেচনা করে ভর্তির অনুমোদন দেওয়া হয়। নিউরো সার্জারি বিভাগেও নার্সিংহোমের রোগী ভর্তি করার জন্য তবে এমন নিয়ম চালু করব আমরা। আর হাসপাতাল কর্মীদের দালালচক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ পেলে তা অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে।