নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ: রেললাইনের ধারে পরিত্যক্ত ঘর। সেখানে মজুত বোমা। তাকেই বল ভেবে খেলতে গিয়ে বিস্ফোরণে মারাত্মক জখম ছ’বছরের একরত্তি শিশু বান্টি কুমার মাহাত। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ভর্তি করা হয়েছে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার ইউনিটে। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে ইংলিশবাজার পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের ডগপুকুর এলাকায়। শহরের বুকে বোমা ফেটে শিশুর জখম হওয়ার ঘটনায় এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ও চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
মালদহের পুলিস সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, ঘটনার সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলার সুজিত সাহা বলেন, ডগপুকুরে রেললাইনের ধারে একটি পরিত্যক্ত ঘর আছে। সেই ঘরের সামনে গোল ধরনের একটা কিছু পড়ে ছিল। ওই শিশু ওটা নিয়ে খেলতে গেলে জিনিসটি ব্লাস্ট হয়ে যায়। এর ফলে শিশুটি জখম হয়েছে। তাকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে। পুলিস ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
জখম শিশুর বাবা বিকাশ মাহাত বলেন, আমি কাজে গিয়েছিলাম। বাড়ি থেকে ফোন পেয়ে তড়িঘড়ি ছুটে আসি। এসে শুনি আমার ছেলে বাড়ির পাশেই একটা জায়গায় খেলছিল। তখনই একটা বিস্ফোরণ ঘটে। ছেলের দুই পা দুই হাত ও মুখে আঘাত লেগেছে।
এদিন জখম শিশুকে দেখতে হাসপাতালে যান রেলের আধিকারিকরাও। কিন্তু এই বোমা রাখল কারা? শহরের মধ্যে এভাবে কে বা কারা এই বোমা মজুত করেছিল, কেনই বা মজুত করেছিল তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে কাউন্সিলার সুজিতবাবু বলেন, ওই এলাকাটি একটা দ্বীপের মতো। একপাশে পরিত্যক্ত বিমানবন্দরের বিশাল ফাঁকা মাঠ পড়ে আছে। যেখানে কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও নিরাপত্তার বন্দোবস্ত নেই। রাতেও সেখানে অনেকের যাতায়াত আছে। ঘটনাস্থলের আরেক দিকে বাঁধ এবং অন্য দুই পাশে কোতোয়ালি অঞ্চলের বড় বড় আম বাগান ও মালদহ টাউন স্টেশন। শুধুমাত্র এলাকার মানুষ নয়, এখানে বাইরের প্রচুর লোক আসে। অনেক সময় তাদের সনাক্ত করাও সম্ভব হয়। কে কোন কাজে আসছে জানা কঠিন। পুলিসকে বলেছি ঘটনায় যারা জড়িত, রং না দেখেই তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। রেললাইনের ধারে বসা মদ জুয়ার আসর সহ দুষ্কৃতীদের আনাগোনা হয়ে থাকলে সেটা দেখার জন্য বারবার আরপিএফকে বলা হয়েছে।