• ‘ঝড় দেখব, প্লিজ হোটেলছাড়া করবেন না’, সাইক্লোন ট্যুরিজমের হিড়িকে পুরীতে থিকথিকে ভিড় 
    বর্তমান | ২৩ অক্টোবর ২০২৪
  • সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, পুরী: মাথাব্যথা ওড়িশা প্রশাসনের হতে পারে। পর্যটকদের নয়। হোক না ঘূর্ণিঝড়! আছড়ে পড়ুক ১২০ কিমি গতিতে। তার জন্য ছুটি স্যাক্রিফাইস করতে হবে! বিলকুল নয়। পুরীতে তাই এই মুহূর্তে সাইক্লোন ট্যুরিজমের হাওয়া। ‘ডানা’ যতই ঝাপ্টা দিক না কেন, হোটেলের ঘর তাঁরা ছাড়বেন না। প্রবল দুর্যোগ? ঘরে বসেই দেখবেন তাঁরা। উপভোগ করবেন। পর্যটকদের সাফ কথা, ‘আচমকা ঝড়ের আগে হোটেল থেকে আমাদের বের করে দিলেই হবে নাকি? ছুটি কাটিয়েই বাড়ি ফিরব।’ সময়ের আগে হোটেলছাড়া যাতে না করা হয়, সেই আবেদন জানিয়েছেন পর্যটকরা। 

    দুই ২৪ পরগনা, কলকাতা, হাওড়া, বর্ধমান, আসানসোল-দুর্গাপুর বা হুগলি। পুজো পরবর্তী মরশুমে পুরীর সৈকত এখন মিনি বাংলা। ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস পাওয়ার পরও সি-বিচ থিকথিক করছে। তারপরও অবশ্য স্বস্তিতে নেই ব্যবসায়ীরা। একটা চাপা আতঙ্ক ঘুরপাক খাচ্ছে সৈকত-দোকানদারদের মনে। প্রশ্ন একটাই, বড় ক্ষতি হবে না তো? পর্যটকদের মধ্যে যদিও সে সব দাগ কাটতে পারছে না। এদিনও প্রচুর পর্যটক এসেছেন শ্রীজগন্নাথ দর্শনে। পুরীর মন্দিরে পুজো দেওয়ার জন্য লম্বা লাইন দেখা গিয়েছে। বিকেল হতে সি-বিচের চায়ের দোকানপাটেও ছিল উপচে পড়া ভিড়। মঙ্গলবার রাতেও যাঁরা রওনা দিয়েছেন, তাঁরা পৌঁছে যাবেন আজ, বুধবার সকালে। তবে ওই পর্যন্তই। ট্রেন ক্যানসেল হওয়ায় তারপর দূরের যাত্রীরা কেউ জগন্নাথধামে আগামী দু’দিন পৌঁছতে পারবেন না। কিন্তু যাঁরা ইতিমধ্যেই আছেন? অনেকরই ফেরার টিকিট পরের সপ্তাহের। ঝড় হোক, ছুটি কাটছাঁট করতে রাজি নন কেউই। বর্ধমান থেকে আসা পর্যটক সুমিত কয়াল বলছিলেন, ‘আমাদের হলিডে হোমে বুকিং সোমবার পর্যন্ত। তার আগে ফিরব না। ঝড় হলে ঘরে বসেই দেখব।’ দুর্গাপুরের বাসিন্দা মৌসুমী ঘোষের বক্তব্য, ‘ঝড় হলে কী আর করব? হোটেলেই থাকব। মঙ্গলবার এসেছি। সোমবার ফেরা। তার আগে যেতে চাই না।’  

    হোটেল থেকে শুরু করে আশপাশের সাইট সিইং—বুকিং চলেছে এদিনও। পুরীর অনেক ট্যুর অপারেটিং সংস্থা বলছে, ঝড় কতটা কী হবে, জানা নেই। অনেকেই পুরীর দর্শনীয় স্থানে ঘুরতে যেতে চাইছেন। তাই আমরাও বুকিং নিচ্ছি। তবে পুরী প্রশাসন থেকে হোটেল ফাঁকা করে দেওয়ার কথা বলা হলেও, তা ঠিক নয় বলেই দাবি ব্যবসায়ীদের। পুরীর একাধিক হোটেল, লজ, হলিডে হোম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রশাসন থেকে আদৌ খালি করার কথা বলা হয়নি। অনেক পর্যটকের বুকিং বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার পর্যন্ত আছে। তাঁদের তড়িঘড়ি বের করে দেওয়া যাবে না। ঝড় এলে হোটেলেই তাঁরা যেন বন্দি থাকেন, সে ব্যাপারে সতর্ক করা হবে। যদিও এই মুদ্রার উল্টো পিঠও আছে। পর্যটকদের বুকিংয়ের সময়সীমা শেষ হয়ে গেলে তা আর কিছুতেই বাড়াতে চাইছে না হোটেলগুলি। তাহলে কি নির্দেশিকা সবটাই তলে তলে?
  • Link to this news (বর্তমান)