আর জি করের ৫১ জনের সাসপেনশন স্থগিত হাইকোর্টে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকার
বর্তমান | ২৩ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: থ্রেট কালচার! এই অভিযোগ তুলেই আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল ৫১ জন জুনিয়র ডাক্তারকে। বিষয়টি নিয়ে সোমবার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকে প্রশ্ন তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ‘রাজ্যকে না জানিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ কীভাবে ওই সিদ্ধান্ত নিল? সরকারকে না জানিয়ে এটা করা যায় না।’ মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকেই কার্যত মান্যতা দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সাসপেনশনের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আট চিকিৎসক পড়ুয়া। এদিন বিচারপতি কৌশিক চন্দের পূজাবকাশকালীন বেঞ্চ তাঁদের সাসপেনশনের নির্দেশে স্থগিতাদেশ জারি করেছে। স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকার। কলেজ কর্তৃপক্ষ ওই জুনিয়র ডাক্তারদের সাসপেন্ড করার যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা কার্যকর করা যাবে না।
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে ধর্ষণ ও খুন ঘটনার পরপরই হাসপাতালের ‘থ্রেট কালচার’ নিয়ে সরব হন জুনিয়র ডাক্তাররা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তাঁরা আন্দোলনে নামেন। কর্তৃপক্ষের কাছে একটি তালিকাও জমা দেন। হাসপাতালের তরফে তলব করা হয় সেই অভিযুক্তদের। তারপরই গত সেপ্টেম্বর মাসে ৫১ জন জুনিয়র চিকিৎসককে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেয় কলেজ কাউন্সিল। এদিন বিচারপতি চন্দের এজলাসে মামলাকারীদের আইনজীবী অর্কপ্রভ সেন বলেন, ‘কোনও কারণ ছাড়াই সাসপেন্ড করা হয়েছে। কেন এমনটা করা হল, তা স্পষ্ট নয়। তাঁদের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ, সেটাও জানানো হয়নি।’ জবাবে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের তরফে আইনজীবী সুমন সেনগুপ্ত বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ কাউকে সাসপেন্ড করেনি। রিড্রেসাল সেলের প্রধান মুখ্যসচিব। কলেজ শুধু রেজোলিউশন ওই সেলের কাছে পাঠাতে পারে। রাজ্যই এনিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা কাউকে বহিষ্কার করিনি।’এই বক্তব্য শোনার পরই বিচারপতি চন্দ নির্দেশে জানিয়ে দেন, এই সাসপেনশন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য। তারা সিদ্ধান্ত না-নেওয়া পর্যন্ত গত ৫ অক্টোবর ৫১ জনকে সাসপেন্ড করার নির্দেশ কার্যকর করা যাবে না।
এদিনের শুনানিতে আন্দোলনকারী চিকিৎসক অনিকেত মাহাতর আইনজীবী কল্লোল বসু বলেন, ‘এই ছাত্রদের বিরুদ্ধে থ্রেট কালচারের অভিযোগ তুলেছিলেন ৫০০ জন রেসিডেন্ট চিকিৎসক। অভিযোগকারীদের পক্ষভুক্ত না করে কীভাবে এই মামলা হতে পারে?’ যদিও বিচারপতি জানিয়ে দেন, মামলায় পক্ষভুক্ত হতে চাইলে রেসিডেন্ট চিকিৎসক সংগঠনকে আবেদন করতে হবে। ‘থ্রেট কালচার’ নিয়ে অন্যতম অভিযোগকারী জুনিয়র চিকিৎসক চন্দ্রমৌলি ঝা অবশ্য আঙুল তুলেছেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের দিকে। তিনি বলেন, ‘আমার এবং আমার বন্ধু মৈনাক রায়, দু’জনের রেজিস্ট্রেশন নম্বর পর্যন্ত এক বছর আটকে রেখে দিয়েছিলেন সন্দীপ ঘোষ। উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়ে আমরা সেই রেজিস্ট্রেশন নম্বর পাই। পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়া, সাপ্লি দেওয়া, হস্টেলের ঘর ভাঙচুর থেকে শুরু করে যত ধরনের অপকর্ম সম্ভব, সব করেছেন সন্দীপ ঘোষ ও তাঁর বাহিনী।’