আর জি করে অভয়াকে ধর্ষণ-খুন: সঞ্জয় ছাড়া অন্য কারও উপস্থিতির প্রমাণ এখনও পেল না সিবিআই
বর্তমান | ২৩ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: দাবিই সার। অভয়ার ধর্ষণ-খুনে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায় বাদে ঘটনাস্থলে আর কারও উপস্থিতির প্রমাণ এখনও খুঁজে পেল না সিবিআই। একাধিক ডিজিটাল নথি বিশ্লেষণ করা হলেও সেখান থেকে কোনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি তারা। তাই তদন্তের গতি ক্রমেই শ্লথ হয়ে পড়ছে। জেরার জন্য ডাকা ব্যক্তির সংখ্যা ধীরে কমছে। এই অবস্থায় সুপ্রিম কোর্টে নতুন কী প্রমাণ তুলে ধরা যাবে, তা নিয়েই চিন্তা বেড়েছে তদন্তকারী অফিসারদের।
এমাসে সুপ্রিম কোর্টের শেষ শুনানিতে সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা দাবি করেন, আর জি করে খুন-ধর্ষণে সঞ্জয় ছাড়া আর কারা জড়িত, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে সিবিআই কী কী তথ্য পেয়েছে, তাও তুলে ধরা হয় আদালতের সামনে। নির্দিষ্ট একটি পেজের নীচের অংশে কী লেখা রয়েছে, তাও জানিয়েছিলেন মেহতা। শিয়ালদহ আদালতে সিবিআইয়ের আইনজীবীর দাবি, পূর্ব পরিকল্পনা করেই অভয়া খুন কি না তার তথ্য-প্রমাণ জোগাড়ের কাজ চলছে। সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করা হলেও এই অপরাধে আরও কারা জড়িত, তা খুঁজছেন তদন্তকারীরা।
তারপরও কয়েকটি দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু এনিয়ে কেন্দ্রীয় এজেন্সির তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও বড়সড় ‘ব্রেক থ্রু’ নেই। অথচ এই অপরাধে আর কারা জড়িত, তা জানতে মরিয়া সিবিআই। এজন্য ঘটনার আগে ও পরের তথ্য বিশ্লেষণ করে সন্দেহভাজনদের তালিকা তৈরি করেছেন তদন্তকারীরা। শুধু ৯ আগস্টই নয়, গত ছ’মাসে তারা যত ফোন কল করেছে তার ‘ডিটেইলস’ বের করার জন্যও কাটাছেঁড়ার কাজ চলেছে। সেখান থেকে তদন্তকারীরা বুঝতে পারছেন, ৯ আগস্ট আর জি করে সারারাত ছিল সন্দেহভাজনদের কয়েকজন। সেমিনার হলের বিল্ডিংয়ে বিভিন্ন ফ্লোরে তাদের টাওয়ার লোকেশন মিলেছে।
হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে, উঠে এসেছে এমনও তথ্য। কিন্তু তাদের মধ্যে কারা সিভিক সঞ্জয়ের সঙ্গে মিলে তরুণী চিকিৎসককে খুন করেছে তার প্রমাণ এখনও পাননি তদন্তকারীরা। যে পূর্ব পরিকল্পনা বা ষড়যন্ত্রের কথা আদালতে বলা হচ্ছে, তার সপক্ষে ওই ডিজিটাল নথি বিশ্লেষণ করে কোনও কিছুই পাচ্ছেন না তাঁরা। বারবার লম্বা-চওড়া দাবির পরও যদি সিবিআই শেষমেশ কিছুই বের করতে না-পারে, তাহলে আদালতে তাদের মুখ পুড়বে। আদালতই প্রশ্ন তুলবে, কীসের ভিত্তিতে তারা এতসব দাবি করছিল।
সে-কথা মাথায় রেখেই বিভিন্ন জনকে জেরা করে পাওয়া তথ্যাদির তুলনামূলক বিশ্লেষণ করছেন অফিসাররা। তার ভিতর থেকে নতুন ‘ক্লু’ পেতেই মরিয়া কেন্দ্রীয় এজেন্সি। একইসঙ্গে আর্থিক দুর্নীতি মামলায় জেলবন্দি ডাক্তার আশিস পান্ডেকেও খুন-ধর্ষণের মামলায় নিয়ে জেরার পরিকল্পনা রয়েছে তদন্তকারীদের। কিন্তু ওই ডাক্তারকে জেরার পরেও যদি নতুন তথ্য না মেলে, তবে কী হবে? এই প্রশ্নই ভাবাচ্ছে সিবিআই’কে।