স্কুলস্তরে কোডিং থেকে রোবোটিক্স, দ্বাদশেই স্বীকৃত হ্যাম রেডিও অপারেটর
বর্তমান | ২৩ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: প্রতিযোগিতা এবং যুগের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে স্কুলের নিচু ক্লাস থেকেই চালু হয়ে যাচ্ছে উন্নত প্রযুক্তি শিক্ষা। এটি বিগত কয়েক বছরের ট্রেন্ড হলেও দিন দিন ঊর্ধ্বমুখী। নিচু ক্লাসেই কোডিং এবং রোবোটিক্স নিয়ে চর্চা শুরু করে দিয়েছে শহরের বহু স্কুল। রীতিমতো অত্যাধুনিক ল্যাব তৈরি করেই চলছে ‘স্টেম’ চর্চা। এই স্টেম-এর অধীনে বিজ্ঞান, গণিতের পাশাপাশি রয়েছে প্রযুক্তি এবং ইঞ্জিনিয়ারিংও। একসময় স্কুল স্তরে সাধারণ বিজ্ঞান ল্যাবরেটরি ব্যবহারই হতো উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে। তবে, সেই ধারা পাল্টে নিচু ক্লাস থেকে স্টেম ল্যাবরেটরি ঢুকে গিয়েছে সরকারি ও সরকার পোষিত স্কুলেও। মিলছে অনন্য সাফল্যও।
জি ডি বিড়লা সেন্টার ফর এডুকেশনে স্টেম ল্যাবরেটরির সুবাদে ছাত্রীরা অনন্য নজির গড়ে ফেলেছে। তারা বিশ্বের অন্যতম কনিষ্ঠ স্বীকৃত হ্যাম রেডিও অপারেটরের স্বীকৃতি পেয়েছে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর (গ্লোবাল হ্যাম কমিউনিটি) থেকে। দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী শানায়া রায় এবং তাঁর সহপাঠীরা এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছে স্কুলের স্টেম ল্যাবকেই। স্কুলের ছাত্রীরা আইআইটি দিল্লি এবং আইএইচএফসির যৌথ সহায়তায় আয়োজিত সিআইএসসিই রোবোটিক্স কম্পিটিশনেও অংশ নিয়েছে। দ্বাদশের ছাত্রী অরুন্ধতী মুখোপাধ্যায় যেমন জানায়, এই ল্যাবের জন্য ভবিষ্যতে সে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়ার বিষয়ে ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সাউথ সিটি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, আওয়ার লেডি কুইন অব দ্য মিশনও তাদের পাঠ্যে স্টেমকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছে। জি ডি বিড়লার অধ্যক্ষ ক্রেগ অ্যান্থনি লুকাস জানান, আইসিএসই’র ষষ্ঠ বিষয় হিসেবে স্টেম চালু করা হয়েছে স্কুলে। ২০২৫ সালে প্রথম ব্যাচের পড়ুয়ারা পরীক্ষায় বসবে। শিক্ষকরা জানাচ্ছেন, এখন দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরাও স্টেম ল্যাবে কম্পিউটার কোডিংয়ের প্রাথমিক পাঠ নিতে পারছে। শুধু তাই নয়, স্টেম ল্যাবগুলি থেকে প্রতিশ্রুতিমান ছাত্রছাত্রীদের পাঠানো হচ্ছে বিভিন্ন বাণিজ্যিক সংস্থার ল্যাবে। সেখানে উন্নত পরিকাঠামো এবং বাস্তব সমস্যা নিয়েও তারা কাজ করতে পারছে। এজন্য বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গেও কাজ করছে স্কুলগুলি। পিছিয়ে নেই বেশকিছু নামী সরকার পোষিত স্কুলও। সম্প্রতি যাদবপুর বিদ্যাপীঠ স্টেম কুইজে সারা দেশের মধ্যে সেরা হয়েছে। এখানকার এক ছাত্র ব্যক্তিগত ক্ষেত্রেও দেশের সেরা হয়েছে। প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, শুধু বিজ্ঞান বা প্রযুক্তিচর্চাই নয়, ছাত্রছাত্রীদের বিশ্লেষণাত্মক ক্ষমতা, ক্রিটিক্যাল থিঙ্কিং এবং বাস্তব সমস্যা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হওয়া এবং তার সমস্যা খোঁজার দক্ষতাও বাড়ছে।