• নৈহাটিতে লিবারেশনের প্রার্থী কেন? ফের ‘ঐতিহাসিক ভুল’ নয় তো, ক্ষোভ সিপিএমেই
    বর্তমান | ২৩ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাকপুর: এক সময় সিপিএমের দুর্ভেদ্য ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল নৈহাটি। তখন লালপার্টির নেতাদের দাপটে বাঘে-গোরুতে একঘাটে জল খেত! সেই সুদিন আগেই গত হয়েছে। এবার দেখা গেল, নৈহাটি বিধানসভার উপ নির্বাচনে প্রার্থীই দিচ্ছে না সিপিএম। যে আসন থেকে কয়েক বছর আগেও রঞ্জিত কুণ্ডুর মতো দাপুটে বাম নেতা জিতে রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী হয়েছিলেন, সেই আসন এবার বামফ্রন্টের বাইরের বাম দল সিপিআই (এমএল) লিবারেশনকে ছেড়ে দিয়েছে সিপিএম। সোমবার বামেদের প্রার্থীতালিকা প্রকাশ হওয়ার পরই এনিয়ে নৈহাটিতে নানা জল্পনা চলছে। সেই সঙ্গে সিপিএমের নিচু তলায় অসন্তোষ দানা বাঁধতে শুরু করেছে। হতাশা বাড়ছে তাঁদের মধ্যে। তাঁরা বলছেন, সিপিএমের এতদিনের একটি ঐতিহ্যবাহী আসন অন্য দলকে ছেড়ে দেওয়া আসলে দলের দুর্বল সংগঠন ও বেহাল অবস্থাকেই তুলে ধরছে। তবে সিপিএমের জেলা কমিটির নেত্রী গার্গী চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘বৃহত্তর বাম ঐক্যের স্বার্থে প্রার্থী দিয়েছি আমরা। এর মধ্যে অন্য কোনও বিষয় খোঁজা অর্থহীন।’ 

    প্রসঙ্গত, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রঞ্জিত কুণ্ডু নৈহাটি থেকে পরপর তিনবার বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন। বিধায়ক হয়েছিলেন গোপাল বসুও। দেশের অন্যান্য রাজ্যে সিপিএম এবং লিবারেশনের জোট থাকলেও বাংলায় আগে কখনও এমনটা দেখা যায়নি। এই প্রথম বামফ্রন্টের প্রার্থী তালিকায় তাদের নাম উঠল। নৈহাটি উপ নির্বাচনে বামফ্রন্ট মনোনীত লিবারেশন প্রার্থী হিসেবে লড়াই করবেন দেবজ্যোতি মজুমদার। তিনি দলের জেলা কমিটির সদস্য এবং নৈহাটি লোকাল কমিটির সম্পাদক। অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ককর্মী দেবজ্যোতিবাবু বারাকপুর শিল্পাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জুটমিলে সংগঠন করেছেন। বাম কর্মী-সমর্থকরা তাঁকেই সমর্থন করবে বলে আশাবাদী তঁর দল। 

    এদিকে, কংগ্রেসের পক্ষ থেকে নৈহাটি আসনে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সূত্রের খবর, হাত প্রতীকে প্রার্থী হচ্ছেন পরেশ সরকার। বৃহস্পতিবার তিনি মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেন। মঙ্গলবার সকালে গৌরীপুর চৌমাথায় বজরঙবলী মন্দিরে পুজো দিয়ে প্রচার শুরু করেন এই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী রূপক মিত্র। রূপকবাবু বলেন, ‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের লড়াই। তাই তৃণমূলকে সরাতে হবে। সিপিআই ( এমএল) লিবারেশন প্রার্থী এখানে ভোট কাটতে দাঁড়িয়েছেন।’ তৃণমূলও অবশ্য সিপিএমকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। দলের টাউন কমিটির সভাপতি তথা তৃণমূল প্রার্থী সনৎ দে বলেন, ‘সিপিএম উপ নির্বাচনে লড়াই করার মতো যোগ্য প্রার্থীই খুঁজে পায়নি। তাই মুখ বাঁচাতে লিবারেশনকে আসনটি ছেড়ে দিয়েছে। এখানে লিবারেশনের কোনও সংগঠন নেই। ভোটের আগেই সিপিএম এখানে হেরে বসে রয়েছে।’ তিনিও এদিন থেকে বাড়ি বাড়ি প্রচার শুরু করলেন। 
  • Link to this news (বর্তমান)