পুজো ফুরিয়েছে। বাতাসে হেমন্তের ছোঁয়া। রাতের দিকে হালকা শীতের আমেজও থাকছে। নামতে শুরু করেছে পারদ। কিন্তু কলকাতায় পারাপতনের সঙ্গে বাতাসের বিষও বাড়ে পাল্লা দিয়ে। অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে শহরের বাতাস খারাপ হতে শুরু করেছে। বাতাসের মানের সূচক অর্থাৎ এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) কলকাতার প্রায় সর্বত্রই ১০০ ছাড়িয়েছে। কোথাও কোথাও তা দেড়শোও পার করে ফেলেছে। দীপাবলির এখনও কিছুটা দেরি রয়েছে। এখন থেকেই যদি বাতাসের মান খারাপ হতে শুরু করে, তা হলে কালীপুজোয় তা ‘খুব খারাপ’ থেকে শ্বাসের অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। আশা একটাই, ‘দানা’র প্রভাবে বৃষ্টির ফলে বাতাসের বিষ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসবে।গত শনিবার থেকে বাতাস বেহাল হতে শুরু করে। রবিবারই তা ছাড়িয়ে ১০০ ছাড়িয়ে যায়। পুজোর সময়েও শহরের অধিকাংশ এলাকায় একিউআই ছিল ৫০ বা তার নীচে। এটাই স্বাভাভিক বা ব্যবহারযোগ্য বলে ধরা হয়। মঙ্গলবার সকালের দিকে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল অর্থাৎ ময়দান এলাকায় একিউআই ছিল সব থেকে বেশি— ১৪৬। সন্ধ্যার দিকে তা কিছুটা কমলেও ১০০-র নীচে নামেনি। ময়দান এলাকাকে কলকাতার ফুসফুস বলে ধরা হয়।
শীতের শুরুতেই সেখানে বাতাসের এমন হালে আতঙ্কিত সব মহলই। তবে এ দিন বালিগঞ্জ এলাকার বাতাস ছিল সব থেকে খারাপ। সকালের দিকে এখানে একিউআই ছিল ১৬৬। ফোর্ট উইলিয়াম এলাকায় একিউআই ছিল ১৫০। এ ছাড়াও যাদবপুর, পদ্মপুকুর হাওড়ার বেলুড়, ঘুসুড়ি— সর্বত্রই একিউআই ছিল ১৫০-এর আশপাশে। রবীন্দ্র সরোবর এবং সল্টলেকে বাতাসের অবস্থা কিছুটা ভালো ছিল। সেখানে একিউআই ছিল ১০০-র নীচে।
সাধারণত একিউআই ৫০-এর মধ্যে থাকলে তাকে ভালো বলে ধরা হয়। ৫১-১০০র মধ্যে সন্তোষজনক মনে করা হয়। তার পরের ধাপ, অর্থাৎ ১০১-২০০০ খারাপ বলে ধরা হয়। নিম্নতম মাত্রা ৩০০ ছাড়ালে তা খুব খারাপ হিসেবে চিহ্নিত হয়। গত বছরেও এই সময়ে শহরের বাতাসের মানের সূচক ছিল ১০০-র নীচে। বাতাসের দু’টি কণাকে সবথেকে বেশি ক্ষতিকর ধরা হয়। পিএম (পার্টিকুলেট ম্যাটার)-১০, এবং পিএম-২.৫ কণা।
এর মধ্যে আবার পিএম ২.৫ কণা বেশি ক্ষতিকর। কারণ শ্বাসযন্ত্রের মাধ্যমে এই কণা সরাসরি রক্তে মিশে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে। পিএম-১০ এর তুলনায় পিএম ২.৫-এর মাত্রা বাড়ছে অস্বাভিক হারে। সেটাই চিন্তার বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের মতে এর ফলে শ্বাসের সমস্যা, হাঁপানি এবং কাশি বাড়বে।