মৌসম ভবন জানিয়েছে, গত ছ’ঘণ্টায় ‘দানা’ ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটার বেগে উত্তর-পশ্চিম অভিমুখে এগিয়েছে। ২৪ অক্টোবর রাত থেকে ২৫ অক্টোবরের সকালের মধ্যে শক্তি বাড়িয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের আকার নেবে। উপকূলে আছড়ে পড়ার সময় ঝড়ের গতিবেগ পৌঁছবে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটারে। আর এর প্রভাবেই আগামী দু’দিন বৃষ্টিতে ভিজবে কলকাতা-সহ দুই ২৪ পরগনাও। বুধবার দিনভর হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে শহরে। বৃহস্পতি ও শুক্রবার কলকাতায় জারি হয়েছে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির (৭-২০ সেন্টিমিটার) কমলা সতর্কতা। শনিবারও শহরের কোনও কোনও অংশে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে শহরে। সর্বোচ্চ বেগ পৌঁছতে পারে ৮০ কিলোমিটারেও। ঝড়ের প্রভাবে শহরের ব্যস্ত রাস্তায় ভেঙে পড়তে পারে গাছ। অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকায় জল জমার সম্ভাবনা রয়েছে। যার জেরে ব্যাহত হতে পারে যান চলাচল। বন্দর এলাকাতেও জারি হয়েছে সতর্কতা। ঝড়ের কারণে বৃহস্পতির রাত থেকেই শহরে বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা।
সম্ভাব্য দুর্যোগের আশঙ্কায় ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে আগাম প্রস্তুতি। বুধবার সকাল থেকেই কলকাতা পুলিশের তরফে মাইকের মাধ্যমে প্রচার শুরু হয়েছে। দুর্যোগের সময় শহরবাসীকে অযথা বাইরে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে। মোবাইল-সহ অন্যান্য বৈদ্যুতিন সামগ্রী চার্জ দিয়ে রাখা এবং দরকারি কাগজপত্র সুরক্ষিত রাখার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে তৈরি রয়েছে কন্ট্রোল রুমও। বুধবার রাত সাড়ে ১২টা থেকেই চালু হয়ে যাচ্ছে চারটি হেল্পলাইন নম্বর। ৯৪৩২৬১০৪৫৫, ৯৪৩২৬১০৪৪৫, ৯৪৩২৬১০৪৩০ এবং ৬২৯২২৬৩৪৪০— এই চারটি নম্বরের মাধ্যমে সরাসরি লালবাজারের ‘ইউনিফায়েড কম্যান্ড সেন্টার’-এ যোগাযোগ করা যাবে। মৌসম ভবন জানিয়েছে, এই মুহূর্তে ওড়িশার পারাদ্বীপ উপকূল থেকে প্রায় ৫২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে, পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ থেকে ৬০০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে ৬১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে রয়েছে ‘দানা’। বৃহস্পতিবার ভোরেই তা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। এর পর পুরী এবং সাগরদ্বীপের মাঝামাঝি ওড়িশার ভিতরকণিকা এবং ধামারার কাছে আছড়ে পড়বে ‘দানা’।