পঙ্কজ দত্তের অসুস্থতার খবর সামনে আসতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভেন্দু লিখেছেন,"রিটায়ার্ড আই. জি, ৭৩ বছর বয়সি অতি পরিচিত প্রতিবাদী মুখ, বিশিষ্ট ভদ্রলোক শ্রী পঙ্কজ দত্ত গুরুতর অসুস্থ হয়ে অচেতন অবস্থায় বেনারসের একটি হাসপাতালে বর্তমানে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। একটি মিথ্যা ও ভুল মামলায় তাকে সম্প্রতি ফাঁসানো হয় কারণ তিনি প্রতিবাদী। আর এই রাজ্যে প্রতিবাদীদের সাথে কি ধরণের আচরণ করা হয় তা রাজ্যের মানুষ জানেন। মামলার কারণে তিনি কলকাতার বড়তলা থানায় গেলে তাকে অনর্থক পুলিশের হেনস্থার সম্মুখীন হতে হয়। তিনি যে একজন প্রাক্তন পুলিশ কর্তা এবং দীর্ঘদিন আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করেছেন সেটিও বর্তমানে রাজ্যের দলদাস প্রশাসন ভুলে গিয়েছে। পঙ্কজ বাবুকে শুধু হেনস্থাই নয় স্থানীয়দের ভুল বুঝিয়ে তাঁদের বিক্ষোভের মুখে তাঁকে ঠেলে দেওয়া হয়, তাঁকে জুতোর মালা পর্যন্ত পরানোর চেষ্টা হয়। দীর্ঘ ছ ঘন্টার ওপর তাঁকে চুড়ান্ত অপমান ও হেনস্থা করা হয়, শুধু তাই নয় তাঁকে একটু জল পর্যন্ত দেওয়া হয়নি এবং তার তাঁর আইনজীবীদেরও অপমান করতে ছাড়া হয়নি। এই অসম্মান তিনি মেনে নিতে পারেননি এবং দুদিন আগে তিনি তার আত্মীয়ের কাছে বেনারসে যান এবং সেখানেই তিনি অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারান। বর্তমানে বেনারসের একটি হাসপাতালে উনি চিকিৎসাধীন এবং চেষ্টা করা হচ্ছে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স-এ করে যাতে ওনাকে দ্রুত কলকাতায় আনা সম্ভব হয়। পরম করুনাময় ঈশ্বরের কাছে আমি প্রার্থনা করি সম্মানীয় পঙ্কজ বাবু দ্রুত সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরুন। একই সাথে কলকাতার বড়তলা থানার এই ধরনের ঘৃণ্য আচরণের আমি তীব্র নিন্দা করছি।"
এর পালটা জবাব দিয়েছেন আবার কুণাল ঘোষ। তিনি লিখেছেন, "পঙ্কজ দত্তর দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। তাঁর অসুস্থতা নিয়ে কুৎসা, অপপ্রচার করছে কোনো কোনো মহল। পঙ্কজবাবু এই বয়সে কার্যত রোজ টিভি চ্যানেলে উত্তেজিতভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নির্দিষ্ট লাইনে চিৎকার করেন; সেমিনারেও তাই, এসব থেকেই অসুস্থতা। যারা ওকে দিয়ে রোজ চিৎকার করায়, তারা দায়ী। পঙ্কজবাবু একটি এলাকার মহিলাদের নিয়ে কুৎসিত কথা বলেছিলেন। তাই পুলিশি ব্যবস্থা হয়েছে। আর পুলিশ ডাকার জন্য যদি উনি অসুস্থ হন, তাহলে এতদিন পুলিশকর্তা ছিলেন কী করতে? তাহলে তাপস পাল, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সুলতান আমেদের মৃত্যুর জন্য সিবিআই দায়ী, তাই তো দাঁড়ায়, নাকি?"
প্রসঙ্গত আরজি কর-কাণ্ডে প্রেক্ষিতে অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস পঙ্কজ দত্তর সোনাগাছি মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক ছড়ায়। ক্ষুব্ধ হয় হাইকোর্টও! আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার পঙ্কজ দত্ত বলেছিলেন, "আরজি করের মতো জায়গায় একজন মহিলা চিকিৎসককে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হল। সোনাগাছির মতো জায়গায় হলে তাও মেনে নেওয়া যেত।" তাঁর এই বক্তব্য নিয়েই শুরু হয় বিতর্ক। মামলা হয় হাইকোর্টে। এমনকি আদালতের কাছে রক্ষাকবচের আর্জি নিয়ে দ্বারস্থ হলে, পঙ্কজ দত্তের আবেদনে সাড়া দেয়নি হাইকোর্ট। হাইকোর্ট জানায়,একজন আইপিএস অফিসার হয়ে তিনি যদি শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে থাকেন, তবে তাঁকে তার ফল ভোগ করতে হবে।