চাষিদের সুবিধার্থে তাদের কাছ থেকে সহায়ক মূল্য ধান কিনে থাকে রাজ্য সরকার। তবে ধান ক্রয় কেন্দ্রগুলিতে ওজনে কারচুপি হয় করা হয় বলে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ জানিয়ে আসছেন কৃষকরা। এর আগেও ওজনে কারচুপি রুখতে একাধিক পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার। তা সত্ত্বেও ক্রয় কেন্দ্রে ওজনে মার খাচ্ছেন চাষিরা। এই অবস্থায় চাষিদের সেই দাবি মেনে ওজনে কারচুপি ঠেকাতে এবার বিভিন্ন ধান ক্রয় কেন্দ্রে বসানো হচ্ছে সিসিটিভি ক্যামেরা। এরফলে ওজনে কারচুপি হচ্ছে কি না সিসি ক্যামেরাতে তা সহজেই ধরা পড়বে। মূলত ধান ক্রয় কেন্দ্রগুলিতে নিরাপত্তার ব্যবস্থা এবং দুর্নীতি রুখতে এই পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার।
সম্প্রতি নবান্নের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রতিটি ধান ক্রয় কেন্দ্রে বাধ্যতামূলকভাবে সিসিটিভি রাখতে হবে। এতদিন ধরে চাষিরা ধান ক্রয় কেন্দ্রগুলিতে দুর্নীতি এবং ওজনে কারচুপি অভিযোগে সরব হয়েছিলেন। জেলায় জেলায় খাদ্য দফতরে এনিয়ে জমে ছিল অভিযোগের পাহাড়। সেই সংক্রান্ত অভিযোগ পেয়েই নড়েচড়ে বসল খাদ্য দফতর।
উল্লেখ্য, এবারের খারিফ মরসুমে কৃষকদের কাছ থেকে সহায়ক মূল্যে ৬৮ লক্ষ মেট্রিক টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। মূলত রাজ্য সরকার প্রতিবাদ বেনফেড, কনফেড কিংবা নাফেড- এর মাধ্যমে ধান কিনে থাকে। তবে এবার আরও দুটি সংস্থা ডব্লুবিইসিএসসি এবং বিপিএএমসিএলের মাধ্যমেও ধান কিনবে সরকার। এছাড়াও ধান বিক্রিতে চাষিদের উৎসাহিত করতে ধানের সহায়ক মূল্যের দাম বাড়ানো হচ্ছে এবার। সেই সঙ্গে চাষিদের কুইন্টাল প্রতি ২০ টাকা অতিরিক্ত টাকা উৎসাহ ভাতা দেবে রাজ্য সরকার।
প্রসঙ্গত, এবার ধানের সহায়ক মূল্য প্রতি কুইন্টালে প্রায় ১৩০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। গতবার কুইন্টাল পিছু এই দাম ছিল ২১৮৩ টাকা। এবার তা করা হয়েছে ২৩০০ টাকা। ই-প্যাডি পোর্টালে যেসমস্ত চাষিদের নাম নথিভুক্ত রয়েছে সরকার শুধু তাদের কাছ থেকেই ধান কিনবে বলে ঘোষণা করেছে। ধান বিক্রির ক্ষেত্রে স্লট বুকিংয়ের নিয়ম থাকছে আগের মতোই। বিক্রির ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই চাষিদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দেবে রাজ্য সরকার।
এদিকে, খাদ্য দফতরের নির্দেশ ছিল রাইস মিলগুলি সরকারের কাছ থেকে যে পরিমাণ ধান নেবে সেই অনুযায়ী ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি জমা রাখতে হবে। কিন্তু, অনেক রাইস মিল তা করেনি। এই অবস্থায় খারিফ মরসুমে সেটা আর হবে না বলে আগেই কড়া বার্তা দিয়েছে খাদ্য দফতর। কড়া ভাষাই দফতরের তরফে বলা হয়েছে, যে পরিমাণ ধান নেওয়া হবে সেই পরিমাণ ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি রাইস মিলগুলিকে জমা রাখতে হবে। শুধু তাই নয়, একাধিক রাইস মিল রয়েছে যেগুলির খাদ্য দফতরের অনলাইনে তথ্য নেই সেগুলিতে গিয়ে খাদ্য দফতর তদন্ত করতে পারে। একই সঙ্গে ধান কেনার ক্ষেত্রে সংস্থাগুলিকেও বেশকিছু নির্দেশ দিয়েছে খাদ্য দফতর।