এই বালিকাকেও অপহরণ করা হয়েছিল বলে পরিবারের দাবি। সাত দিন নিখোঁজ থাকার পরে মঙ্গলবার সকালে তার দেহ মেলে। অভিযোগ, অপহৃত ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ করে, খুন করা হয়েছে। দেহ পোড়ানো হয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। এই ঘটনায় তিন জনকে ধরা হয়েছে। তবে পুলিশের বক্তব্য, ধর্ষণ করে খুন কি না, তা ময়না তদন্তের পরে স্পষ্ট হবে। রাতে সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়, যার সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি। সেখানে দেখা যায়, এক অভিযুক্ত দাবি করছে, বালিকাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়। পুলিশ এই নিয়ে কিছু বলতে চায়নি। তবে পকসো ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, এক সপ্তাহ ধরে নিখোঁজ ছিল ওই নাবালিকা। লাগোয়া এলাকার ৫০ বছরের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ তুলেছিল বাড়ির লোক। অভিযোগ, ওই ব্যক্তি প্রায়ই ওই নাবালিকার বাড়িতে যেত। মেয়েটির পরিবারকে নানা সময়ে সাহায্যও করত। অভিযোগ, ১৫ অক্টোবরও ওই ব্যক্তি সেই বাড়িতে যায়। মেয়েটির বাবাকে ১০০ টাকা দিয়ে বাজার করে আনতে বলে। ওই নাবালিকাকে ‘ফাস্ট ফুড’ খাওয়ানোর কথা বলে নিয়ে যায়। সেই রাত থেকে নিখোঁজ মেয়েটি। একই সঙ্গে উধাও ওই ব্যক্তিও। ১৬ অক্টোবর মেয়েটির পরিজনেরা এ নিয়ে থানায় অপহরণের মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, মূল অভিযুক্ত ফোন ব্যবহার করে না। পরিবারের সঙ্গেও তার তেমন সম্পর্ক ছিল না। তাই অভিযুক্তকে খুঁজতে সমস্যা হচ্ছিল। পুলিশ তরফে জানানো হয়, এর পরে স্থানীয় কয়েক জন বাসিন্দার কাছ থেকে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, ওই অভিযুক্ত বিহারের কিসানগঞ্জে একটি ইটভাটায় কাজ করত। সে ইটভাটা-সহ লাগোয়া কয়েকটি ইটভাটাতেও খোঁজখবর শুরু করে পুলিশ। সেখান থেকেই খবর মেলে, ওই অভিযুক্ত নেপালে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। মঙ্গলবার সকালে অভিযান চালিয়ে নেপালে ঢোকার আগেই সীমান্ত লাগোয়া একটি এলাকা থেকে ওই অভিযুুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশের দাবি, জেরায় ওই ব্যক্তি তাদের কাছে নাবালিকাকে খুনের কথা স্বীকার করে। সে জানায়, ওই ঘটনায় তার সঙ্গে আরও দু’জনের যুক্ত ছিল। তাদেরও গ্রেফতার করে পুলিশ। এ দিনই অভিযুক্তের কথা মতো আলিপুরদুয়ারের একটি জনপদে নির্জন একটি জায়গায় ঝোপ থেকে উদ্ধার হয় নাবালিকার মৃতদেহ। পরিবার ও এলাকাবাসীদের অভিযোগ, ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে সাত বছরের ওই বালিকাকে। তার পরে দেহটি পুড়িয়ে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা হয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়।
ধৃতদের কঠোর শাস্তির দাবিতে এ দিন সংশ্লিষ্ট থানার সামনে ও সড়কে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। নিহতের মা বলেন, ‘‘আমার মেয়েকে যারা মেরেছে, তারা যেন চরম শাস্তি পায়।’’ জেলা পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, ‘‘খুবই বেদনাদায়ক ঘটনা। অভিযুক্তেরা যাতে কঠোর শাস্তি পায়, সে চেষ্টা করা হবে।’’