স্টাফ রিপোর্টার: আর জি কর কাণ্ডের পর জেলায় জেলায় তৈরি হয়েছিল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। রাত দখল থেকে নানা মিছিল মিটিং কর্মসূচির মেসেজ আসত সেইসব গ্রুপে। নির্যাতিতার জন্য বিচারের দাবিতে নাগরিকদের সেই গ্রুপগুলিতেই পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছিল কোথায় কখন কী কর্মসূচি নেওয়া হবে। কিন্তু সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের নবান্ন-বৈঠকের পরে ‘আমরণ অনশন’ প্রত্যাহারের পরেই সেই গ্রুপ ছাড়তে শুরু করেছেন সকলে।
যাদবপুর থেকে চন্দননগর, পাঁশকুড়া থেকে হাওড়া, বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখা যাচ্ছে, মঙ্গলবার রাতের মধ্যে হু হু করে কমছে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সদস্য সংখ্যা। কেন ছাড়ছেন গ্রুপ? গ্রুপ থেকে যাঁরা বেরিয়ে যাচ্ছেন তাঁদের সিংহভাগেরই ধারণা, আন্দোলন এবারের মতো শেষ। মুখ্যমন্ত্রী জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে লাইভ স্ট্রিমিংয়ে যে বৈঠক করেছেন তারপরে আন্দোলন চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার কোনও যৌক্তিকতা নেই। যদিও মুষ্টিমেয় যে কয়েকজন গ্রুপে রয়েছেন তাঁরা বলছেন, ‘মূল দাবি’ আদায় এখনও বাকি। নির্যাতিতার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। এদিকে বিভিন্ন এলাকার হোয়াটসঅ্যাপ ‘গ্রুপ অ্যাডমিন’-রা স্বীকার করেছেন, ‘আমরণ অনশন’ প্রত্যাহারের পর থেকে অনেকেই তাঁদের কাছে ‘হতাশা’ ব্যক্ত করছেন। অনেকেই গ্রুপ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।
নির্যাতিতার বাড়ি সোদপুরে এলাকার একটি গ্রুপ থেকে সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৩০ জনের বেশি ‘লেফট’করে চলে গিয়েছেন। একইভাবে সালকিয়া-বামনগাছি এলাকার একটি গ্রুপ, রানাঘাটের নাগরিকদের গ্রুপ, শ্রীরামপুর থেকে মধ্যমগ্রাম–বিভিন্ন এলাকায় স্কুলের প্রাক্তনীদের গ্রুপ থেকেও ‘লেফট’ হয়ে যাচ্ছেন অনেকে। যদিও আন্দোলনের অন্যতম ‘মুখ’ দেবাশিস হালদার মঙ্গলবার জানিয়েছেন, ‘‘আগামী শনিবার সমাবেশ (গণ কনভেনশন) থেকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। আমরা আন্দোলনকারীরা কোনও হতাশার জায়গায় নেই। কেউই যেন হতাশ না হন।’’ যদিও পাড়ায় পাড়ায় তৈরি হওয়া হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের অ্যাডমিনরা বলছেন, দীর্ঘ আন্দোলনের পর অনেকের মধ্যেই ‘হতাশা’ কাজ করতে শুরু করেছে। নির্যাতিতার বাড়ির এলাকায় নাগরিক আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক সাথী দত্ত জানিয়েছেন, ‘‘আন্দোলন নানা বাঁক নিয়ে অনশনে এসে পৌঁছেছিল। কিন্তু অনন্তকাল তো তা চলতে পারে না।’’