• প্রেমিকের সঙ্গে ঘরছাড়া স্ত্রীকে ফেরাতে না পেরে থানার সামনেই খুন
    এই সময় | ২৪ অক্টোবর ২০২৪
  • এই সময়, নৈহাটি: প্রকাশ্য দিবালোকে থানার সামনে স্ত্রীর গলায় খুর চালিয়ে খুন করল এক যুবক। বুধবার দুপুরে নৈহাটি থানার সামনে এমন ঘটনায় হকচকিয়ে যান পুলিশ থেকে শুরু করে স্থানীয়রা। ঘটনাস্থল থেকেই পুলিশ অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্কের জেরেই এই ঘটনা।

    নিহত মহিলার নাম সুপ্রিয়া প্রসাদ (৩৫)। নৈহাটি পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্যাটারসন রোড বৈষ্ণবপাড়ার বাসিন্দা সুনীল প্রসাদের সঙ্গে বছর কুড়ি আগে বিয়ে হয় কৃষ্ণনগরের সুপ্রিয়ার। স্থানীয় একটি রবারের গুদামে কাজ করতেন সুনীল। তিন সন্তানকে নিয়ে দম্পতির সংসারে বছর আচমকাই ছন্দপতন ঘটে বছর খানেক আগে। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে মধ্যে ঢুকে পড়ে নৈহাটি গৌরীপুর লালদীঘির বাসিন্দা বছর পঁচিশের পঙ্কজ পাণ্ডে নামে এক যুবক। সুনীলদের পাড়ায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে আসত পঙ্কজ। সেখানেই সুপ্রিয়াকে দেখে তার মনে ধরে। এর পর থেকে সুনীলের বাড়়ির কাছে নিয়ম করে আড্ডা দিতে শুরু করে পঙ্কজ। প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে সুপ্রিয়াও।

    স্থানীয়রা জানান, সুপ্রিয়ার বাড়িতেও যাতায়াত ছিল পঙ্কজের। স্বামী সুনীল কাজে বেরিয়ে গেলে মাঝেমধ্যেই সুপ্রিয়ার বাড়িতে হাজির হতো পঙ্কজ। ছেলেমেয়ের কাছে ধরা পড়েও প্রেমের সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে রাজি হননি সুপ্রিয়া৷ সুনীল বিষয়টি জানতে পেরে স্ত্রীকে ওই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার অনুরোধ করলেও তিনি শোনেননি বলে অভিযোগ। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তিও শুরু হয়। সুনীলের বাবা রামচন্দ্র প্রসাদ বলেন, ‘বৌমা পঙ্কজ নামে একটি ছেলের সঙ্গে মেলামেশা করতে গিয়ে ধরাও পড়েছে কয়েকবার৷ ছেলে অত্যন্ত ভালোবাসতো বৌমাকে। স্ত্রী পরকীয়ার কথা জানতে পেরে ছেলে কয়েকবার আত্মহত্যারও চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তাতেও বৌমার মন গলাতে পারেনি।’কিছুদিন আগে স্বামী ও তিন সন্তানকে ছেড়ে পঙ্কজের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন সুপ্রিয়া। তা মেনে নিতে পারেনি সুনীল। এদিন সে পঙ্কজের বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে। পঙ্কজকে থানায় গিয়ে মিটমাট করার প্রস্তাব দেয়। এমনকী স্ত্রীকে ডিভোর্স দিতে প্রস্তুত বলেও জানায় ওই যুবক। এর পর তিনজনে নৈহাটি থানায় আসে। থানার সামনে চায়ের দোকানে বসে স্ত্রীকে ফের বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করতে থাকে সুনীল। কিন্তু, কোনও ভাবেই রাজি হননি সুপ্রিয়া। এর পরই পকেট থেকে খুর বের করে স্ত্রীর গলায় চালিয়ে দেয় সুনীল। রক্তে ভেসে যায় রাস্তা। লুটিয়ে পড়েন সুপ্রিয়া।

    চিৎকার চেঁচামেচি শুনে থানা থেকে বেরিয়ে আসে পুলিশ। সুনীলকে ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়। সুপ্রিয়াকে নৈহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতাল নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। ব্যারাকপুরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (উত্তর) গণেশ বিশ্বাস বলেন, ‘একটি নির্দিষ্ট অভিযোগ হয়েছে। তার প্রেক্ষিতে নিহতের স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে খুনে ব্যবহৃত খুর। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’
  • Link to this news (এই সময়)