এখন ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ নিয়ে বাংলা তথা গোটা দেশে চর্চা চলছে। আর তাই সেটা থেকে বাঁচতে নানা পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ঝড়ের পরিস্থিতি বিচার করে এবার ৯ জেলার জেলাশাসককে নিয়ে আজ, বুধবার জরুরি বৈঠক করলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ আছড়ে পড়ার আগে শালিমার স্টেশনে দেখা গেল এক বিচিত্র ছবি। প্রবল ভারী চেন দিয়ে ট্রেনের চাকা বেঁধে রাখা হচ্ছে। রেল কর্মী এই কাজ করছেন। তবে সেটা অবশ্যই রেল কর্তৃপক্ষের নির্দেশে। কিন্তু এখন প্রশ্ন হল, ১২০ কিমি বেগের ঝড় কি আস্ত ট্রেনকে উড়িয়ে নিয়ে যেতে পারে? ট্রেনের চাকার সঙ্গে চেনের বাঁধন কি যুক্তিযুক্ত?
এদিকে আজ, বুধবার থেকেই জেলায় ফেরি পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। লোকাল ট্রেন থেকে শুরু করে বিমান পরিষেবা বাতিল করা হয়েছে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, সাতটি জেলায় বেশি প্রভাব ফেলবে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। তাই সেগুলির উপর বাড়তি নজর দিতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। এই আবহে শালিমার স্টেশনে যে ছবি দেখা গিয়েছে তা অত্যন্ত বিরল। তবে ঘূর্ণিঝড়ের জেরে আগে ট্রেন উড়ে গিয়েছিল বলে রেল সূত্রে খবর। তাই কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছেন না রেল কর্তৃপক্ষ। রেলের লাইনের কাঠের পাতানের সঙ্গে ট্রেনের তলা থেকে লাইনজুড়ে চেন দিয়ে বেঁধে রাখা হচ্ছে লোকাল ট্রেন।
অন্যদিকে আজ রাত পর্যন্ত তেমন কোনও ঝুঁকি নেই। কিন্তু বুধবার, বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ দাপট দেখাতে পারে। তাই বিশেষ খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে। আজ রাত থেকেই সতর্ক দৃষ্টি রাখতে বলা হয়েছে। এই আবহে দূর থেকে লম্বা ভারী চেন টেনে নিয়ে আসতে দেখা যায়। আর তারপর ট্রেনের চাকার সঙ্গে বেঁধে ফেলা হয়। এই কাজ ঠিক মতো হচ্ছে কিনা সেটা আবার আর একজন খতিয়ে দেখেন। তিনি ট্রেনের গার্ড। ইতিমধ্যেই শিয়ালদা এবং হাওড়া ডিভিশনে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র জেরে হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। শিয়ালদার জন্য নম্বর—০৩৩ ২৩৫১৬৯৬৭ এবং হাওড়ার জন্য নম্বর—০৩৩ ২৬৪০২২৪১ ও ০৩৩ ২৬৪০২২৪২।
এছাড়া কলকাতা পুরসভার কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। আজ, বুধবার থেকে আগামী শনিবার পর্যন্ত এই নির্দেশিকা জারি থাকবে। আর ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে কন্ট্রোল রুম। সমস্ত নিকাশি পাম্পিং স্টেশনে ২৪ ঘণ্টা কর্মীদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। আর লালবাজারে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। জেলার কন্ট্রোল রুম যাতে সব সময় কাজ করে সেটার দিকে নজর দিতে বলা হয়েছে। আগামীকাল রাতে থেকেই ঘূর্ণিঝড় দানা আছড়ে পড়তে পারে স্থলভাগে। তখন ঘণ্টায় গতিবেগ থাকতে পারে ১২০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টারও বেশি। এই বিষয়ে শালিমার স্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার সন্দীপ মজুমদার বলেন, ‘রেলের সরক্ষার জন্য চেন দিয়ে বাঁধা হচ্ছে। যাতে ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে রোল ডাউন না করে।’