এখন ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ নিয়ে বাংলা তথা গোটা দেশে চর্চা চলছে। আর তার মধ্যেই নদী ভাঙন প্রতিরোধের স্থায়ী সমাধানের দাবিতে সেচ দফতরের সামনে বিক্ষোভ–অবস্থান করল প্রদেশ কংগ্রেস। সামনে ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন রয়েছে। তার আগে এমন অবস্থান বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এই সমস্যা সমাধানে গুরুত্ব দিতে কেন্দ্র–রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগের দাবি করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীকেও স্মারকলিপি দিয়েছেন প্রদেশ সভাপতি শুভঙ্কর সরকার। আর এই বিষয়টি জানতে পেরে কড়া জবাব দিয়েছেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া।
একদিকে যখন ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ আসছে তখন অপরদিকে নদীপারের বাসিন্দারা আতঙ্কে ভুগছেন। বেশ কয়েকটি নদীপারে ভাঙন হয়েছে বলে খবর। আর তা নিয়েই এবার তিন শীর্ষনেতাকে স্মারকলিপি দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। এই বিষয়ে শুভঙ্কর সরকার বলেন, ‘আমরা রাজ্য, কেন্দ্রীয় সরকারকে একসঙ্গে এই সমস্যার কথা জানিয়েছি। বহু দিন ধরে মানুষ এই সমস্যায় নিজের ভিটে হারাচ্ছেন। যার সমাধান এভাবে না হলে এবার ৫০ জন প্রতিনিধি নিয়ে নয়াদিল্লি গিয়ে জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের সামনে ধরনায় বসবে প্রদেশ কংগ্রেস। সেখানে থাকবেন ভিটে হারানো মানুষও।’
এখন মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া জেলায় আছেন ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ আছড়ে পড়লে মানুষের সাহায্য করবেন বলে। আর সেখানে থাকাকালীন মানসবাবু খবর পান, সেচ দফতরে স্মারকলিপি দিয়েছে কংগ্রেস। সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া মেদিনীপুর এখন সেচ দফতর ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যৌথভাবে কন্ট্রোল রুম খুলেছেন। পরিস্থিতি নিজে সরেজমিন দেখছেন। সেখানেই মানস ভুঁইয়ার বক্তব্য, ‘২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন ক্ষমতায় আসেন, তখন চুক্তি হয়েছিল ফরাক্কা ব্যারেজের উপরে ৪০ কিমি আর নিচে ৮০ কিমি কেন্দ্রীয় সরকার দেখভাল করবে। আর ৭৫ শতাংশ দেবে দিল্লির সরকার। সেটা কমে ৬০:৪০ অনুপাতের কথা বলে। মুখ্যমন্ত্রী তাতেও রাজি হন। কিন্তু কেন্দ্র একটা টাকাও দেয়নি।’
প্রদেশ কংগ্রেসের এই অবস্থান এবং স্মারকলিপি নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন মানস ভুঁইয়া। নয়াদিল্লির সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পরামর্শ দেন শুভঙ্কর সরকারকে। কারণ কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারকে বারবার বঞ্চনা করেছে। এই বঞ্চনা নিয়ে যে কোনও রাজনৈতিক দলই হোক, তাদের কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠতে হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী। মানস ভুঁইয়ার কথায়, ‘আসল লড়াইটা তো নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে করতে হবে। যদি বাংলার প্রতি ভালবাসা নিরেট হয় এবং মুর্শিদাবাদ, মালদা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, দুই মেদিনীপুরকে ভালবাসা নিরেট হয় তাহলে পতাকা নিয়ে মিছিল করে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে গর্জন করুক।’