• ছোলা, মসুর ও সর্ষে চাষের পরামর্শ ২৭ হাজার চাষিকে
    বর্তমান | ২৪ অক্টোবর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, সিউড়ি: বীরভূমে অতিবৃষ্টির জেরে পুজোর আগে বন্যা প্লাবিত এলাকাগুলিতে চাষে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। এখন জল সরে যাওয়ার পর সেইসব ক্ষতিগ্রস্ত চাষের জমিগুলিতে চাষিদের বিকল্প চাষের পরামর্শ দিচ্ছে জেলা কৃষিদপ্তর। ছোলা, মসুর ডাল, সরষে সহ একাধিক ফসল চাষের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের এইসব বীজ, বীজ শোধনকারী ওষুধ ও সার ইতিমধ্যেই বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। 

    পাশাপাশি জেলার ছয়টি ব্লকের ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের রাজ্য সরকারের বাংলা শস্যবিমা প্রকল্পের আওতায় সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা করছে কৃষিদপ্তর। এছাড়াও যেসব এলাকায় অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে চাষের জমি জলে ডুবে যাওয়ার পর জল সরে গিয়েছে, কিন্তু ফসলের আংশিক ক্ষতি হয়েছে, সেইসব চাষের জমিতে ছত্রাকনাশক প্রয়োগের পরামর্শ দিচ্ছে কৃষিদপ্তর। 

    কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বীরভূমের মোট ছ’টি ব্লকে বোরো ধান চাষে একশো শতাংশ ক্ষতি হয়েছে। এই ছ’টি ব্লকের মধ্যে রয়েছে সাঁইথিয়া ব্লকের ৮টি পঞ্চায়েত এলাকা, খয়রাশোল ব্লকের একটি, লাভপুর ব্লকের ৬টি, ময়ূরেশ্বর-১ ব্লকের একটি, ময়ূরেশ্বর-২ ব্লকের ৩টি ও রামপুরহাট-২ ব্লকের ৬টি পঞ্চায়েত এলাকা। প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টরেরও বেশ জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এইসব এলাকার প্রায় ২৬ হাজার ৭৯২ জনেরও বেশি কৃষক এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাই এইসব ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের জমিতে জল সরে যাওয়ার পর বিকল্প চাষের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সেই বিকল্প চাষের জন্য চাষিদের ৩১ হাজার ৫৭০কেজি সরষে বীজ, ১৬ হাজার ৩৪০ কেজি মুসুর ডালের বীজ এবং ২৯ হাজার ৬৮০ কেজি ছোলার বীজ দেওয়া হয়েছে বিনামূল্যে। এর সঙ্গেই বীজ শোধনকারী ওষুধ এবং সারও দেওয়া হয়েছে। 

    উল্লেখ্য, দুর্গাপুজোর প্রাক মুহূর্তে জেলাজুড়ে  অতিবৃষ্টির কারণে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল জেলার বেশকিছু এলাকায়। জেলার প্রায় দশটিরও বেশি ব্লকের চাষের জমি জলের তলায় চলে গিয়েছিল। যদিও কিছুদিনের মধ্যে জল সরে যাওয়ার পর বেশকিছু জায়গায় চাষে আংশিক ক্ষতি হয়। কিন্তু সেই সঙ্গেই বেশকিছু এলাকায় একশো শতাংশ ধান চাষের ক্ষতি হয়। সেই চাষের ক্ষতির চূড়ান্ত হিসেব কষা শুরু করেছে জেলা কৃষিদপ্তর। পাশাপাশি চাষিদের ক্ষতির জন্য বাংলা শস্যবিমায় ক্ষতিপূরণ এবং রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে  বিকল্প চাষের ব্যবস্থাও করছে কৃষিদপ্তর। 

    কৃষিদপ্তরের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, বন্যায় জেলার ছ’টি ব্লকের সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে। আমরা সেইসব এলাকার চাষিদের বিকল্প চাষের জন্য বীজ, ওষুধ, সার ইত্যাদি বিনামূল্যে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি এবং বাংলা শস্যবিমায় চাষিদের ক্ষতিপূরণেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)