• খানাকুলে বন্যায় ভেঙে যাওয়া নদীবাঁধ তৈরি শুরু, বরাদ্দ আড়াই কোটি টাকা
    বর্তমান | ২৪ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: বন্যার জলের তোড়ে ভেঙে যাওয়া নদীর বাঁধ তৈরির কাজ অবশেষে শুরু হল। খানাকুলে দ্বারকেশ্বর, রূপনারায়ণ নদের উপর ভেঙে যাওয়া চারটি জায়গায় নদীবাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে বলে সেচদপ্তর জানিয়েছে। বাঁধগুলি নির্মাণে প্রায় আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে বলে সেচদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে বাঁধ শক্তপোক্ত করে নির্মাণের দাবিতে সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

    সেচদপ্তরের আরামবাগ ডিভিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার দীনবন্ধু ঘোষ বলেন, বাঁধগুলির নির্মাণ কাজ মঙ্গলবার থেকে শুরু করা হয়েছে। দ্রুততার সঙ্গে কাজ হবে সব জায়গায়। কাজে নজরদারিও রাখা হচ্ছে। 

    উল্লেখ্য, মাসখানেক আগে আরামবাগ মহকুমায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তার জেরে মহকুমার সমস্ত নদীতেই জল চরম বিপদসীমার উপর বইতে থাকে। তাতেই দ্বারকেশ্বর ও রূপনারায়ণ নদের একাধিক জায়গায় বাঁধ ভেঙে পড়ে। জলের চাপ সহ্য করতে না পেরে বাঁধগুলির বিশাল অংশজুড়ে ভাঙন হয়। তারফলে বাঁধের কাছে থাকা একাধিক কাঁচা ও পাকা বাড়ি ভেঙে তছনছ হয়ে গিয়েছে। বহু পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়ে। এরমধ্যে খানাকুলের তালিত, বন্দিপুর খেতেপাড়া ও বেরাপাড়াতে নদীবাঁধ ভেঙে যায়। বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে হু হু করে জল ঢুকতে থাকে। পুজোর আগেই সেইসব বাঁধ নির্মাণের বরাত দেয় সেচদপ্তর। কিন্তু কাজ থমকে যায়। ইতিমধ্যে তালিত এলাকায় একটি যন্ত্রে অগ্নি সংযোগের জেরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। তবে টানাপোড়েনের পর অবশেষে কাজ শুরু করছে সেচদপ্তর নিযুক্ত ঠিকাদার সংস্থা। সেচদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, শাল-বল্লা, মাটি দিয়ে নতুন বাঁধ নির্মিত হবে সংশ্লিষ্ট ভাঙন এলাকায়। তবে ঘূর্ণিঝড় ডানার প্রভাবে ফের কাজ থমকে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। 

    স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, নদীবাঁধের তীরবর্তী এলাকায় একাধিক বেআইনি নির্মাণ থাকায় সমস্যা হয়েছে। এজন্য বাঁধ ভেঙেছে। তাছাড়া বোরো বাঁধ সময়মতো না সরানোও ভাঙনের অন্যতম কারণ। 

    নদীবাঁধ নির্মাণ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক চাপানউতোরও হয়েছে। যদিও সেচদপ্তরের দাবি, ২০২১ সালের পর তৈরি বাঁধের কাজগুলি সুরক্ষিত রয়েছে। এবারও যাতে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে শক্তপোক্তভাবে বাঁধ হয় সেই দিকে নজর রাখা হচ্ছে। 

    খানাকুলের বিধায়ক বিজেপির সুশান্ত ঘোষ বলেন, এখনও বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরুই হয়নি। সবে নির্মাণের কাজের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বোরো বাঁধ সময়মতো সরানো হয়নি। সরকারি টাকা লুটের জন্য বোরো বাঁধ নির্মাণে বারবার টেন্ডার করা হয়। 

    খানাকুল-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা কিশোরপুর-২ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দীপেন মাইতি বলেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবিমতো শক্তপোক্তভাবে বাঁধ তৈরির ব্যাপারে আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। বিজেপির অভিযোগ ভিত্তিহীন। খানাকুলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলেও কেন্দ্রীয় সরকার কোনও সাহায্য করে না। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই বারবার মানুষের পাশে দাঁড়ান। নতুন করে আবার বাঁধ নির্মাণ হচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)