সংবাদদাতা, দেওয়ানহাট: চব্বিশের লোকসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীদের সমর্থনে প্রকাশ্যে উত্তরবঙ্গজুড়ে বংশীবদন বর্মনের নেতৃত্বাধীন গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশন প্রচারে নেমেছিল। গ্রেটার নেতা বংশী নিজের গ্রাম দিনহাটার জরাবাড়ি থেকে কোচবিহারের প্রার্থী জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়ার হয়ে প্রচার শুরু করেছিলেন। তাঁর নির্দেশেই জিসিপিএ’র কর্মী সমর্থকরা রাজ্যের শাসকদলের হয়ে প্রচারে বেরিয়েছিলেন। সিতাই বিধানসভা উপ নির্বাচনেও তৃণমূল প্রার্থী সঙ্গীতা রায়ের হয়ে প্রচারে নামার কথা ঘোষণা করল বংশীর নেতৃত্বাধীন জিসিপিএ। লোকসভা ভোটের মতো তৃণমূলের সঙ্গে প্রচারে না থকালেও সংগঠনের কর্মীদের তৃণমূল প্রার্থীকেই ভোট দেওয়ার বার্তা দিয়েছেন বংশীবদন।
গ্রেটার নেতা বংশীবদন বর্মন বুধবার বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই এলাকার মানুষের জন্য বহু কাজ করেছেন। অধিকার আদায়ের জন্য আমরা যে আন্দোলন করেছি সেই অধিকার আদায়ের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। তাই লোকসভায় উত্তরবঙ্গের সবক’টি আসনে একসঙ্গে ভোটের প্রচার না করলেও তৃণমূলের পাশে ছিলাম। উপ নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থীকে ভোট দিতে সংগঠনের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই নির্দেশ কর্মীদের দিয়েছি।
চব্বিশের লোকসভা ভোটে কোচবিহারে রাজবংশী ভোট একটা বড় ফ্যাক্টর ছিল। ফলে প্রকাশ্যেই তৃণমূলের হয়ে বংশীবদনের প্রচার যে অনেকটাই বিরোধীদের ব্যাকফুটে ফেলে দিয়েছিল সেই কথা এক বাক্যেই স্বীকার করেন জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। এবার উপ নির্বাচনেও তৃণমূলের প্রার্থীর পাশে থাকার কথা গ্রেটার নেতা বংশীবদন বর্মন ঘোষণা করতেই বিরোধী শিবিরের প্রার্থীরা অনেকটাই ব্যাকফুটে যাবে বলে মনে করছে জেলার রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
রাজনৈতিক মহলের মতে, লোকসভা ভোটের আগে গ্রেটার নেতা বংশীবদন তাঁর অবস্থানের কথা স্পষ্ট করাতে ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল বিরোধী শিবির। বিশেষ করে বিজেপি। কেননা, উত্তরবঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে রাজবংশী ভোট বড় ফ্যাক্টর বরাবরই। বিশেষ করে কোচবিহারের পটভূমিতে গ্রেটারের ওই ভূমিকা লোকসভা ভোটে তৃণমূলকে বাড়তি অক্সিজেন জুগিয়েছিল সেটা স্পষ্ট হয়েছে। এবার উপ নির্বাচনের আগে ফের তৃণমূলের পাশে থেকে সংগঠনের কর্মীদের শাসকদলের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার বার্তা যে এই ভোটে বিরোধীদের বেশ চাপে ফেলল তা বলাই যায়।
যদিও এই বিষয়ে বিজেপি প্রার্থী দীপককুমার রায় বলেন, কে কাকে সমর্থন জানিয়েছে জানি না। তবে তৃণমূল সন্ত্রাস না করলে ও মানুষ শান্তিতে ভোট দিতে পারলে আমরা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। বিজেপির কোচবিহার জেলা সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু বলেন, যতই বংশীবদনরা তৃণমূলের পাশে থাকার কথা বলুন, তাতে কোনও লাভ হবে না। রাজবংশী সমাজের মানুষ বিজেপির সঙ্গেই আছে। সেটা ভোটের ফল বের হলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে। কোচবিহারের এমপি তৃণমূলের জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া বলেন, আমরা রেকর্ড পরিমাণ ভোটে জয়ী হব, সেই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তবে গ্রেটার আমাদের সমর্থন জানানোয় ভোটের মার্জিন আরও বাড়বে, এটা নিশ্চিত।