সুরক্ষা-সংস্কারের কাজ শেষ এক মাসেই, মেডিক্যাল কলেজগুলিতে প্রতিশ্রুতি পূরণ নবান্নের
বর্তমান | ২৪ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সুরক্ষা ও সংস্কার। অভয়া আন্দোলন শুরুর সময় এটাই ছিল দাবির অভিমুখ। পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা, ডাক্তারদের রেস্টরুম, বাথরুম... সুপ্রিম কোর্টে কিন্তু রাজ্য সরকার প্রথমেই হলফনামা দিয়ে জানিয়েছিল, ৩১ অক্টোবরের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে কাজ। মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ সেই ডেডলাইন এগিয়ে করেছিলেন ২৫ অক্টোবর। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের ক্ষেত্রে যেহেতু সিবিআইয়ের অনুমোদন পেতে দেরি হয়েছে, তাই শুধু মাত্র ওই হাসপাতালের জন্য মুখ্যসচিবের সময়সীমা ছিল ৩১ অক্টোবর। তারপরও অবশ্য আন্দোলন, রাত দখল ও অনশন চলেছে। নবান্ন অবশ্য তার মধ্যেও বসে থাকেনি। নিঃশব্দে রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজের কাজ প্রায় পুরোটাই শেষ করে ফেলেছে রাজ্য পূর্ত দপ্তর। আর সেটাও ‘প্রতিশ্রুতি’র সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই। ইতিমধ্যে চালু হয়ে যাওয়া ‘রাত্তিরের সাথী’ প্রকল্পের অধীনেই প্রত্যেক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ঝাঁ-চকচকে রেস্টরুম, শৌচাগার, পর্যাপ্ত আলো এবং সিসি ক্যামেরা সুনিশ্চিত করেছে রাজ্য সরকার।
অধিকাংশ মেডিক্যাল কলেজের পরিকাঠামো উন্নয়নের দায়িত্বই দেওয়া হয়েছিল পূর্তদপ্তরকে। মুখ্যসচিবের নেতৃত্ব এবং পূর্তমন্ত্রী পুলক রায় এবং সচিব অন্তরা আচার্যের তদারকিতে পুজোর মধ্যেও কাজে ঘাটতি ছিল না। প্রত্যেকটি কাজ শেষ হওয়ার পর তার দ্রাঘিমারেখা-অক্ষরেখা জিও ট্যাগিং করে একটি রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। তাতেই দেখা যাচ্ছে, এসএসকেএম, ন্যাশনাল মেডিক্যাল, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ সহ ১৮টি হাসপাতালে রেস্টরুম তৈরির ১০০ শতাংশ কাজ শেষ করে ফেলেছে পূর্তদপ্তর। ইতিমধ্যে ৪২৯টি রেস্টরুম তৈরির কাজ সম্পূর্ণ। বাকি ১৩৯টির কাজও একেবারে শেষ পর্যায়ে। পূর্তদপ্তর যে সব হাসপাতাল সংস্কারের দায়িত্বে ছিল, তার ১৯টিতে নতুন শৌচাগার চালুও হয়ে গিয়েছে। ২৭টি মেডিক্যাল কলেজে সব মিলিয়ে মোট ৮২৪টি বাথরুম তৈরির টার্গেট নেওয়া হয়েছিল। দিনরাত কাজ চালিয়ে ৫৬০টি শৌচাগার তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। বাকি ১৮২তে জল বা বিদ্যুৎ সংযোগের মতো ছোটখাটো কাজ বাকি। সেটাও আগামী এক-দু’দিনের মধ্যেই হয়ে যাবে বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর।
এই সব পরিকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি মেডিক্যাল কলেজগুলিতে চিকিৎসকদের সুরক্ষা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত মাত্রায় বসে গিয়েছে হাইমাস্ট আলো এবং সিসি ক্যামেরা। এসএসকেএম থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল—১৩টি মেডিক্যাল কলেজেই মোট ২৮৭৯টি সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ প্রায় শেষ। বাকি ৫২টির কাজ বুধবার রাতের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।
এই প্রকল্পের জন্য ১১৩ কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ করেছে রাজ্য। কিন্তু তার থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল সময়সীমা। তাই একাধিক দল নামিয়ে টার্গেট পূরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নবান্নের এক কর্তা। শুধু তাই নয়, এই কাজের ছবি এবং তথ্য নতুন করে তৈরি একটি পোর্টালে তুলে রাখছেন পূর্তদপ্তরের সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারা। এ নিয়ে কেউ চ্যালেঞ্জ করলে যাতে তথ্য-প্রমাণ হাতের কাছে পাওয়া যায়।