নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’র আশঙ্কায় বিপর্যস্ত হতে চলেছে রাজ্যের বিমান ও ট্রেন চলাচল ব্যবস্থা। আজ, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত টানা ১৫ ঘণ্টা কলকাতা এয়ারপোর্ট থেকে কোনও বিমান ওঠা-নামা করবে না। পাশাপাশি উপকূলবর্তী এলাকায় নাগাড়ে ১৪ ঘণ্টা ট্রেন পরিষেবা পুরোপুরি স্তব্ধ থাকবে। শিয়ালদহ সাউথ ও হাসনাবাদ শাখায় আজ রাত ৮টা থেকে আগামী কাল সকাল ১০টা পর্যন্ত লোকাল ট্রেন চলবে না। সংশ্লিষ্ট দুই সেকশনে এই ১৪ ঘণ্টায় বাতিল থাকবে ১৯০টি লোকাল। অন্যদিকে, হওড়া ডিভিশনে কাল, শুক্রবার ভোর ৪টে থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত ৬৮টি লোকাল ট্রেন পরিষেবায় ছেদ পড়তে চলেছে। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়তে চলেছে ব্যান্ডেল, বর্ধমান, শেওড়াফুলি, শ্রীরামপুর ও কাটোয়া লাইনে। একইভাবে ‘ডানা’র ঝাপ্টা সামলাতে দক্ষিণ-পূর্ব রেল আজ ও কাল মিলিয়ে ১৭৬টি ট্রেন বাতিল করেছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ ওড়িশা কিংবা চেন্নাইগামী দূরপাল্লার ট্রেন। বাকি মেমু ও ইএমইউ।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, দৈনিক কলকাতা থেকে ১৮৫টি বিমান ওঠা-নামা করে। দেশ-বিদেশ মিলিয়ে যাত্রী সংখ্যা আনুমানিক ৪৫ হাজার। ঝড়ের আশঙ্কায় উড়ান তো বন্ধ থাকছেই, আজ সন্ধ্যার পর থেকে কোনও বিমান রানওয়েতেও রাখা হবে না। সেগুলি পার্কিং এরিয়ায় কড়া সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে থাকবে। এমনকী ঘূর্ণিঝড়ের সময়ে রানওয়েতে কর্মীদের উপস্থিতির উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। তবে শুক্রবার পরিষেবা চালু হওয়ার পর যাতে আর কোনওরকম অসুবিধা না হয়, তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ট্রেন চলাচল নিয়ে অবশ্য বুধবার সকাল থেকে একপ্রস্থ বিভ্রান্তি তৈরি হয়। পূর্ব রেলের জনসংযোগ বিভাগের তরফে প্রেস বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, শিয়ালদহ ডিভিশনে ১৪ ঘণ্টার জন্য সব লোকাল বন্ধ থাকবে। এ সংক্রান্ত ডিভিও বার্তাও দেয় পূর্ব রেল। দুপুরে অবশ্য সেই দাবি নস্যাৎ করে পাল্টা সাংবাদিক সম্মেলন করেন শিয়ালদহের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) দীপক নিগম। কেবলমাত্র শিয়ালদহ দক্ষিণ ও হাসনাবাদ শাখায় ট্রেন পরিষেবা বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেন তিনি। চাপে পড়ে তারপরই পূর্ব রেলের তরফে সকালের ভিডিও ‘ডিলিট’ করে দেওয়া হয়। জনসংযোগ বিভাগের বিভ্রান্তিকর তথ্যের জেরে চরম নাকাল হন লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষ। কারণ, প্রতিদিন ১৬ লক্ষ যাত্রী এই শাখায় যাতায়াত করেন। তাঁদের বক্তব্য, সাধারণ মানুষের করের টাকায় বেতন হয় রেল কর্তাদের। চরম অপেশাদারিত্ব ও সমন্বয়ের অভাবে দুর্যোগের সময় এই গুজব ছড়ানোর দায় তাঁরা নেবেন তো?