নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাকপুর: ১০ বছরের ছোট যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিন সন্তানের মা। প্রেমিকের হাত ধরে নতুন করে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখছিলেন নৈহাটির বৈষ্ণবপাড়ার সুপ্রিয়া প্রসাদ। কিন্তু, তা মেনে নিতে পারেননি স্বামী সুনীল প্রসাদ। সেই রোষে গলায় ক্ষুর চালিয়ে স্ত্রীকে খুন করার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। বুধবার মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে নৈহাটি থানার সামনেই। বারাকপুর পুলিস কমিশনারেটের এক আধিকারিক বলেন, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেপ্তার করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর আগে সুনীলের সঙ্গে সুপ্রিয়ার বিয়ে হয়েছিল। তাঁদের তিন সন্তানও রয়েছে। সম্প্রতি দম্পতির মধ্যে পঙ্কজ সাউ নামে ২৫ বছরের এক যুবক ঢুকে পড়ে। পঙ্কজের বাড়ি গৌরীপুরের লালদিঘি। সুনীলদের পাড়ায় সে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে আসত। তখনই সুপ্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কয়েক মাস যেতেই বিষয়টি সুনীলের নজরে পড়ে। আপত্তি তুলতেই শুরু হয় অশান্তি। স্বামী ও তিন সন্তানকে ছেড়ে দু’দিন আগে পঙ্কজের বাড়িতে গিয়ে ওঠে সে। এই ঘটনা মেনে নিতে পারেননি সুনীল। এদিন তিনি পঙ্কজের বাড়ি গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। পঙ্কজকে নৈহাটি থানায় গিয়ে মিটমাট করার প্রস্তাব দেয়। এমনকী স্ত্রীকে ডিভোর্স দিতে তিনি প্রস্তুত বলে জানান। এরপর তিনজনে নৈহাটি থানায় আসেন। থানার সামনে চায়ের দোকানে বসেন তাঁরা। স্ত্রীকে ফের বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করতে থাকেন। কিন্তু, কোনওভাবেই স্ত্রী তাতে রাজি হননি। এরপরই পকেট থেকে ক্ষুর বের করে স্ত্রীর গলায় চালিয়ে দেয়। দিনেরবেলা প্রকাশ্যে এই ঘটনা দেখে হতবাক হয়ে যান অনেকেই। ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিস। জখম মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, চোখের সামনে এভাবে খুন করে দেবে আমরা ভাবতেই পারিনি। রাস্তায় রক্তবন্যা বয়ে যায়। পুলিস সুনীল প্রসাদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। ধৃতের বাবা বলেন, আমার ছেলে বউমাকে খুব ভালোবাসত। বউমা ভালোবাসার দাম দিল না। এর আগে আমার ছেলে দুবার আত্মহত্যা করতে গিয়েছিল। বউমা বাড়়ি ফিরবে না জেনেই ছেলে এই কাজ করেছে।