• ৪০ বছর পর বোধোদয়! আত্মহত্যা রুখতে মেট্রো প্ল্যাটফর্মে গার্ডরেল
    বর্তমান | ২৪ অক্টোবর ২০২৪
  • রাজু চক্রবর্তী, কলকাতা: বিলম্বিত বোধোদয়, নাকি যাত্রীদের চাপের কাছে নতি স্বীকার! অবশেষে আত্মহত্যা রুখতে প্রথমবারের জন্য কলকাতা মেট্রোর পদক্ষেপ ঘিরে এমনই প্রতিক্রিয়া উঠে আসছে। কলকাতার পাতালে ১৯৮৪ সালের ২৪ অক্টোবর দেশের প্রথম মেট্রোর বাণিজ্যিক দৌড় শুরু হয়েছিল। আজ, বৃহস্পতিবার ৪০ বছরের বৃত্ত পূরণ করছে নর্থ-সাউথ মেট্রো রুট। এই চার দশকে কয়েক হাজার আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। বেঘোরে প্রাণ গিয়েছে কয়েকশো যাত্রীর। তবে এতদিন থার্ড লাইনে নাগরিকদের মরণ ঝাঁপ ঠেকাতে উদ্যোগী হয়নি রেল। অবশেষে সুদীর্ঘ চার দশক পর স্টিলের গার্ডরেল বসিয়ে নিজেদের ‘পাপস্খালন’ করতে সচেষ্ট হল মেট্রো। কালীঘাট মেট্রো স্টেশনের ডাউন প্ল্যাটফর্মে পরীক্ষামূলকভাবে এই ‘দেওয়াল’ বসানোর কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। আগামী দিনে সমস্ত স্টেশনে তা বসানো হবে। যদিও এই পদক্ষেপ ঘিরে মেট্রো ভবনের কর্তাদের মধ্যে চরম বিবাদ তৈরি হয়েছে। কারণ, ভিড়ের সময়ে মেট্রোতে ওঠা-নামা করতে গিয়ে গার্ডরেলের ধাক্কায় বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন রেল অফিসারদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, এই কাজে আর্থিক অনিয়মের প্রভূত সম্ভাবনা রয়েছে। তড়িঘড়ি এই কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের প্রশ্ন, এই পদক্ষেপে রেলের প্রচুর টাকা গলে গেলেও প্রকৃত উদ্দেশ্য কতটা সাধিত হবে?

    উল্লেখ্য, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো করিডরে এক্ষেত্রে যাত্রী সুরক্ষার বাড়তি সুরক্ষা বলয় রয়েছে। প্ল্যাটফর্মের দু’ধারে কাচের দেওয়াল তোলা রয়েছে। আত্মহত্যা চেষ্টা করার উন্মুক্ত লাইন মেলার সুযোগ এই রুটে নেই। মেট্রো প্ল্যাটফর্মে পৌঁছলে রেলের দরজার সমান্তরালে দাঁড়ানো স্ক্রিন ডোর খুলে যায়। নির্দিষ্ট সময় পর রেকের দরজা বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই কাচের দেওয়াল বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু দেশের সবচেয়ে পুরনো লাইনে সেই ব্যবস্থার সুযোগ নেই। কারণ, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো পথে ছয় কামরার রেক চলে। সেই মতো সেখানকার প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়েছে। কিন্তু নর্থ-সাউথ রুটে চলাচল করে আট কোচের মেট্রো। স্বভাবতই প্ল্যাটফর্মের আকার সেখানে ভিন্ন। কিন্তু আত্মহনন আটকাতে তিন থেকে সাড়ে তিন ফুটের এই গার্ডরেল বসানোর কার্যকারিতাই প্রশ্নের মুখে। কেননা, প্রায় তিন ফুট উচ্চতার ওই গার্ড রেল সহজে টপকে ঝাঁপ দেওয়া সম্ভব। পাশাপাশি এই রুটে তিন ধরনের মেট্রো রেক চলে। যেগুলি হল  বিএইচইএল (ভেল), মেধা এবং চীনা রেক। প্রতিটি আট কামরা বিশিষ্ট হলেও আকার-আয়তনে ভিন্নতা রয়েছে। তাই প্ল্যাটফর্মে দরজা খোলা-বন্ধ করার অবস্থানগত পার্থক্য রয়েছে। এক্ষেত্রে প্রস্তাবিত গার্ডরেল যাত্রী হয়রানির নতুন নজির তৈরি করতে পারে বলে মেট্রোরই একটি মহলের অভিমত। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)