সংবাদদাতা, কাকদ্বীপ: ডানা ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বুধবার দুপুর থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ভেসেল চলাচল। আগামী শুক্রবার পর্যন্ত সাগরের সঙ্গে কাকদ্বীপের মূল ভূখণ্ড বিছিন্ন হয়ে থাকবে। এত আগে থেকে পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ার জেরে বিপাকে পড়েছেন সাগরের পান চাষিরা। কারণ তাঁরা হঠাৎ এই খবর জানতে পারেন। দুর্যোগের খবর পাওয়ার পর চাষিদের পরিকল্পনা ছিল, বুধবার রাতের মধ্যে তাঁরা পান কেটে গুছিয়ে নিয়ে কাকদ্বীপ বাজারে গিয়ে বিক্রি করে দেবেন। কিন্তু আবহাওয়া পরিবর্তন হওয়ার কারণে এদিন দুপুর থেকে পরিষেবা বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। ফলে সময়ের মধ্যে পান কেটে এপারে আসতে পারেননি অনেকেই।
এ বিষয়ে সাগরের মুড়িগঙ্গা অঞ্চলের পান চাষি গুরুপদ সাউ বলেন, এই দ্বীপের ৫০ শতাংশেরও বেশি মানুষের রোজগার নির্ভর করে পান চাষের উপর। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় দেখা গিয়েছে, এই অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় পানের বরজগুলি। তাই ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগের দিনই আমরা পান কেটে কাকদ্বীপ বাজারে গিয়ে বিক্রি করে দিই। কিন্তু এই দুর্যোগের আগে তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। ফলে ঝড়ের প্রভাব পড়লে অনেক ক্ষতি হতে পারে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এক মোট বা বোঝা (গ্রামীণ ভাষায় বলা হয় তালা) পান বরজ থেকে কেটে গুছিয়ে উঠতে তিনজন মানুষের সারাদিন লাগে। এক্ষেত্রে সাগরবাসী মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জানতে পারেন মুড়িগঙ্গা নদীর শেষ ভেসেল ছাড়বে বুধবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ। তাই চাষিরা এত অল্প সময়ের মধ্যে পান কেটে গুছিয়ে উঠতে পারেননি। চাষিদের দাবি, হাটবারের স্বাভাবিক দিনগুলিতে সাগরদ্বীপ থেকে প্রায় ৬০০ মোট পান বিক্রির জন্য কাকদ্বীপ বাজারে নিয়ে আসা হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ রেমালের আগের দিন প্রায় দেড় হাজার মোট পান বিক্রির জন্য কাকদ্বীপ বাজারে আনা হয়েছিল। কিন্তু বুধবার দুপুর পর্যন্ত মাত্র ৩০০ মোট পান বিক্রির জন্য কাকদ্বীপ বাজারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ফলে এবারের দুর্যোগে পান চাষিরা বড় ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।