নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত ও সংবাদদাতা, বসিরহাট: সবেমাত্র মনোনয়ন জমা দিয়েছেন হাড়োয়া উপ নির্বাচনের বিজেপি প্রার্থী বিমল দাস। এই সময় প্রচার-প্রস্তুতি নিয়ে সরগরম থাকবে দলের নির্বাচনী কার্যালয়—সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এর ঠিক উল্টোচিত্র দেখা গেল বিজেপি কার্যালয়ে। কর্মী-সমর্থকদের উৎসাহ-উদ্দীপনা তো দূরস্থান, তাঁদের একাংশ পার্টি অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিলেন। একটি বা দু’টি নয়, হাড়োয়া, দেগঙ্গা ও বারাসত ২ নং ব্লকে ১০টির বেশি বিজেপি কার্যালয়ে তালা ঝুলছে। এমন ঘটনা পাঁচকান হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় অসন্তোষ থেকেই এই ঘটনা বলে দাবি বিজেপির বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের। তাঁদের অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে প্রার্থী ঠিক করা হয়েছে। স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে পরামর্শ না করেই একজনকে টিকিট দিয়েছে দল। এক্ষেত্রে তাঁরা সরাসরি আঙুল তুলেছেন বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি তাপস ঘোষের দিকে। কর্মীদের স্পষ্ট অভিযোগ, প্রার্থী বিমল দাসকে কখনও এলাকায় মানুষের পাশে থাকতে দেখা যায় না। কোনও কর্মসূচিতেও তাঁকে অংশ নিতে দেখা যায়নি। দেগঙ্গার মহিলা বিজেপি নেত্রী অঞ্জলি মজুমদার যেমন বললেন, ‘যে প্রার্থী নিজের এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়ান না, নিজের পঞ্চায়েতে একটিও বুথে প্রার্থী দিতে পারেন না, তাঁকে কীভাবে দল বিধানসভার মতো ভোটে টিকিট দেয়? আমরা তো মানুষের কাছে ভোট চাইতে যেতে পারছি না।’ বিজেপি সভাপতি তাপস ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘গণতান্ত্রিকভাবে প্রার্থী নির্বাচন করা হয়েছে। বিজেপির কোর কমিটি এবং নেতৃত্বর সঙ্গে কথা বলেই নাম পাঠানো হয়েছিল। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাতে সিলমোহর দিয়েছে। নিজেদের প্রার্থী নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করা ঠিক নয়।’ দেগঙ্গা ২ নং ব্লকের তৃণমূল সভাপতি অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘বিজেপির প্রার্থীর নামে একাধিক অভিযোগ আছে গ্রামবাসীদের। এমনিতেও হাড়োয়া বিধানসভায় বিজেপি করে, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যায় না। বিজেপির অফিসে তালা পড়েছে ওদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে। এটা লজ্জার।’
এদিকে, তৃণমূলের পঞ্চায়েত উপপ্রধানের ভাইকে উপ নির্বাচনে প্রার্থী করল কংগ্রেস। দেগঙ্গার চাঁপাতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হুমায়ুন রেজা চৌধুরী। তাঁর ভাই হাবিব রেজা চৌধুরীও তৃণমূল করতেন। গত পঞ্চায়েত ভোটের আগে তিনি কংগ্রেসে যোগ দেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে তিনি ভোটে লড়ে জয় পান। তাঁকেই হাড়োয়া বিধানসভার উপ নির্বাচনে টিকিট দিয়েছে কংগ্রেস। হাবিব বলেন, ‘আমি লড়ব এবং জিতব। আগে আমি তৃণমূল করতাম। তাই ওদের প্রার্থী নিয়ে অসন্তোষ কীভাবে কাজে লাগাতে হয়, তার ব্লুপ্রিন্ট তৈরি আছে। অপেক্ষা কেবল ভোটগ্রহণের দিনের জন্য।’ পাল্টা উপপ্রধান হুমায়ুন বলেন, ‘গত লোকসভা ভোটে আমাদের পঞ্চায়েত থেকে তৃণমূল যা লিড পেয়েছিল, সেই ভোট গোটা বিধানসভায় কংগ্রেস প্রার্থী পাবেন কি না, সন্দেহ আছে। জয় নিয়ে ভাবছি না। আমাদের লক্ষ্য মার্জিন বাড়ানো।’