• পুজোকে ঢাল করে সরকারি জমিতে একাধিক দোকান, আঁধারে পুরসভা!
    বর্তমান | ২৪ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: শারদীয়া উৎসবে সর্বত্র বসেছিল অস্থায়ী দোকান। সকলে ভেবেছিলেন, পুজোর সময় সিঁথি সার্কাস ময়দান লাগোয়া বি টি রোডের ধারে যেমন বসে তেমনই হয়তো বসেছে দোকানগুলি। কিন্তু পুজো মিটতেই প্রকাশ্যে এসেছে ফুটপাত বেদখল করে দোকান বসানোর পুরনো ছক। দোকান খুলে বেচাকেনা করা স্থানীয় লোকজন বলছেন, নগদ টাকার বিনিময়েই ওই স্টল তাঁরা নিয়েছেন। যদিও পুরসভা বা পূর্তদপ্তরের কাছে ওই দোকানগুলির বিষয়ে কোনও তথ্য নেই। সকলের চোখের সামনে নতুন নতুন দোকান তৈরি হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা কার্যত মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বরানগর জুড়ে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে।

    দুর্গাপুজো এলেই সিঁথির মোড়ে সক্রিয় হয়ে ওঠে একশ্রেণির মাতব্বর। সার্কাস ময়দানে মেলা বসলেও কাশীনাথ দত্ত রোড লাগোয়া মেলার মাঠের সামনের অংশে দোকান বসিয়ে টাকা তোলা হয়। একটি শ্রমিক সংগঠন অফিসের পাশে সিসিটিভি লাগিয়ে গ্যারাজ চলছে কয়েকবছর ধরে। তারই মধ্যে এবার পুজোর প্রাকমুহূর্তে সিঁথির মোড়ের সার্কাস ময়দান লাগোয়া বি টি রোডের ধারে বাঁশ ও টিন দিয়ে অনেক নতুন স্টল তৈরির কাজ শুরু হয়। একইভাবে কাশীনাথ দত্ত রোডের পাশেও তৈরি হয় কিছু দোকান। এনিয়ে স্থানীয় লোকজনের অবশ্য কোনও মাথাব্যাথা ছিল না। সকলে ভেবেছিলেন, এসব দুর্গোৎসব উপলক্ষ্যেই এবং অস্থায়ী ব্যাপার। কিন্তু পুজোর পরেও দোকানগুলি চালু থাকায় অনেকের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে এক দোকানদার বলেন, পুজোর সময় থেকে আমরা এখানে বসেছি। ‘দাদাদের আশ্বাসে’ দোকান চালাচ্ছি। দোকান বসাতে দাদাদের টাকা দিতে হয়েছে কি? তিনি বলেন, আমার জায়গা একটু ছোট—তাই ২০ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। পাশে বড় জায়গা পেতে ওই দোকানদারকে দিতে হয়েছে ৪০ হাজার টাকা!  

    কিন্তু এইভাবে সরকারি জায়গা বেদখল করে নতুন দোকান বসানোকে ঘিরে প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দারা। তাঁরা বলেন, পুজোর আগে ঢাকঢোল পিটিয়ে বি টি রোডের দু’দিক থেকে হকার সরিয়ে রাস্তা ফাঁকা করতে নেমেছিল পুলিস ও প্রশাসন। অথচ, তার মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই বহু নতুন দোকান বসে গেল! বি টি রোডে সিঁথির মোড়ের মতো জায়গায় সরকারি জায়গা দখল হলেও কারও কোনও হেলদোল নেই। এই ব্যাপারে বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলে, তাঁর পারিবারিক সমস্যার কথা জানিয়ে ফোন কেটে দেন স্থানীয় কাউন্সিলার অসীমকুমার গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর কাছ থেকে মেলেনি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজেরও জবাব। সিঁথির মোড়ে দুর্গাপুজো করা বন্ধুদল ক্লাবের সম্পাদক বাসবচন্দ্র ঘোষ বলেন, পুজোর সঙ্গে ওইসব দোকানের কোনও সম্পর্ক নেই। কারা এবং কী উদ্দেশ্যে দোকানগুলি বসিয়েছে তা বলতে পারব না। তবে পুজোর সময় থেকে ওইগুলি বসেছে। আর পাঁচজনের মতো আমিও দেখেছি। বরানগর পুরসভার চেয়ারপার্সন অপর্ণা মৌলিক বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে বলব।’   নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)