এই সময়, কৃষ্ণনগর: ‘দানা’ আবহে এ বার নবদ্বীপে বাড়তি সতর্কতা মধ্যরাতের স্নানের অনুষ্ঠানে। বৃন্দাবনে রাধাকুণ্ডে স্নানের অনুকরণে বহুলাষ্টমী তিথিতে নবদ্বীপেও মধ্যরাতের স্নান হয় ভাগীরথী নদীতে। গত বছর এক লক্ষের বেশি পুণ্যার্থীর সমাবেশ হয়েছিল এই তিথিতে।
এ বছর সেই গঙ্গাস্নানের উৎসব হবে আজ, বৃহস্পতিবার রাতে।বুধবার বিকেল থেকেই নবদ্বীপে ভিন জেলার পুণ্যার্থীরা আসতে শুরু করেছেন। নবদ্বীপ শহরে রানির ঘাট, বড়াল ঘাট, জন্মস্থান ঘাট, শ্রীবাস অঙ্গন ঘাট, মণিপুর ঘাট, ফাঁসিতলা ঘাট সমেত ৯টি ঘাটে চলছে প্রস্তুতি। ‘দানা’র জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুরসভা কর্তৃপক্ষ, পুলিশ, দমকল, বিপর্যয় মোকাবিলা টিম এক যোগে কোমর বেঁধেছে। এ দিন সকালে নবদ্বীপ থানার পুলিশ ও পুরসভার কর্তারা ভাগীরথীর বিভিন্ন ঘাট পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় সতর্কতার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন।
নবদ্বীপ গৌড়ীয় বৈষ্ণব সমাজের মহাসচিব কিশোরকৃষ্ণ গোস্বামী বলেন, ‘ ভক্তদের বিশ্বাস, কার্তিকের এই বহুলাষ্টমী তিথির মধ্য রাতে বৃন্দাবনে রাধাকুণ্ডে স্নান মানে এক সঙ্গে সব তীর্থস্থানে স্নান করার পুণ্য অর্জন। যাঁরা বৃন্দাবনে যেতে পারছেন না, সেই সব ভক্ত গৌর-গঙ্গার দেশ নবদ্বীপে স্নান করতে আসেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার পর থেকে অষ্টমী লাগলেও রাত ১২টার পর স্নানের যোগ। মূল ভিড় হবে ওই মধ্য রাতেই।’
নবদ্বীপের পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহা বলেন, ‘ গত বছর এই তিথিতে এক লক্ষের বেশি পুণ্যার্থী স্নান করেছিলেন নবদ্বীপের বিভিন্ন ঘাটে। এ বার সেই সংখ্যাটা বাড়তে পারে বলে অনুমান করেছিলাম। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, ‘দানা’র জন্য হয়তো ভিড় কম হবে। আমরাও আবহাওয়া রিপোর্টের দিকে সব সময় নজর রাখছি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পরিস্থিতি বুঝে মাইকে প্রচার করে সতর্কতার প্রয়োজনীয় বার্তা দেওয়া হবে। ঘাটগুলোতে বাঁশের ব্যারিকেড করে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা হবে। পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, মেডিক্যাল টিম তো থাকছেই। স্নানের ঘাটগুলোতে নিরাপত্তার জন্য নৌকো সমেত দক্ষ মাঝিদের দিয়ে ঘেরাটোপ তৈরি, পুরসভার স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে কাউন্সিলারদের নজরদারি সব ব্যবস্থাই করা হচ্ছে।’
প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিশও। কৃষ্ণনগরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) উত্তম ঘোষ বলেন, ‘এমনিতেই প্রতি বার এই স্নানের উৎসবে ঘাটে মাইক প্রচার করে সতর্ক করা হয়। ঝড়ের আপডেট তথ্যে কোনও ঝুঁকির বাড়তি বার্তা এলে সঙ্গে সঙ্গে মাইকে প্রচার করে সতর্ক করা হবে বা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। দুশোর বেশি পুলিশ কর্মী বিভিন্ন ঘাটে ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি করবেন। স্পিড বোট, ডুবুরি নিয়ে হাজির থাকবে বিপর্যয় মোকাবিলা টিমও। আর নবদ্বীপ শহর ও গ্রামের যে সব পথ দিয়ে মধ্যরাতে মানুষের আনাগোনা থাকবে, সে দিকেও পুলিশি টহলদারি থাকবে।’