সজাগ থাকতে হবে সবাইকে। রাজ্য প্রশাসনের পাশাপাশি তৃণমূল নেতা-কর্মীদেরও সাংগঠনিক ভাবে দাঁড়াতে হবে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে। উপকূলবর্তী এলাকার তৃণমূল নেতা-কর্মীদের কাছে পৌঁছে গিয়েছে এমনই নির্দেশ। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় দলের সব বিধায়ক, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের বলা হয়েছে, বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকতে। ত্রাণ বিলি, দুর্গতদের ঠিক সময়ে আশ্রয় শিবিরে পৌঁছে দেওয়ার প্রক্রিয়ায় যাতে কোনও খামতি না থাকে, সেটাও দলের জনপ্রতিনিধিদের নিশ্চিত করতে বলেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।দলের অন্যতম রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারের কথায়, ‘মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন যে, দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য রাজ্য সরকার সবরকম ভাবে প্রস্তুত। একই সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস দল হিসেবে নেতা-কর্মীদের সজাগ থাকার নির্দেশ দিয়েছে। সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে হবে। প্রশাসনকে সার্বিক ভাবে সহযোগিতা করতে হবে।’
অতীতে যে কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর ত্রাণবিলি নিয়ে নানা রকম অভিযোগ ওঠে। এ বার যাতে বিরোধীরা সে রকম কোনও অভিযোগ তুলতে না পারে, সে বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করছেন জোড়াফুল নেতৃত্ব। রাজ্য প্রশাসনও এ বিষয়ে নজর রাখছে। উপকূলবর্তী এলাকার তৃণমূল কর্মীরা গত কয়েকদিন ধরে এলাকায় ঘুরে ঘুরে ঘূর্ণিঝড় দানা নিয়ে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করেছেন। আজ, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই তাঁদের রাস্তায় থাকতে বলা হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘বুধবার রাত থেকেই উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের রিলিফ সেন্টারে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রশাসনের সঙ্গে আমরা হাতে হাত লাগিয়ে এই কাজ করছি। অন্য কোনও রাজনৈতিক দলকে কিন্তু রাস্তায় দেখছি না।’
যদিও বিজেপির দাবি, তারাও হাত গুটিয়ে বসে নেই। দলের তরফে দুই ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের বেশ কিছু জায়গায় আশ্রয় শিবির খোলা হয়েছে বলে পদ্ম নেতৃত্বের দাবি। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী এ দিন নিজের এলাকার আশ্রয় শিবিরগুলি পরিদর্শন করেন। দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করে তাঁদের দুর্যোগ মোকাবিলার ব্যাপারে বেশ কিছু নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
শুভেন্দুর কথায়, ‘ইতিমধ্যেই জেলার দশ লক্ষ মানুষকে আমরা আশ্রয় শিবিরে নিয়ে এসেছি। শুনেছি, বিডিওরা বলছেন, গ্রামবাসীদের সরকারি স্কুলগুলিতে নিয়ে আসুন। কিন্তু ওদের খাওয়াদাওয়ার ব্যাপার আমরা জানি না। কাউকে আশ্রয় দিলে যে ন্যূনতম পরিষেবা দিতে হয়, সেটাও রাজ্য সরকার দিচ্ছে না।’ তাঁর অভিযোগ, বিপর্যয় মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকার যে টাকা পাঠাবে, সেটা লুট করার জন্য তৃণমূল সরকার অপেক্ষা করছে। ত্রাণবিলিতে স্বচ্ছতা থাকছে কি না, সে বিষয়ে প্রশাসনিক কাজের উপর দলের নিচুতলার নেতা-কর্মীদের নজর রাখতেও বলেছেন শুভেন্দু অধিকারীরা।