রাজ্যের ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের জন্য কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা মঙ্গলবার রাতে ঘোষণা করা হয়েছে এআইসিসি-র অনুমোদনের পরে। ফলে, কংগ্রেস প্রার্থীদের হাতে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় এমনিতেই কম। সংশ্লিষ্ট জেলায় দলের প্রতীক সংবলিত ফর্ম এ দিন প্রদেশ কংগ্রেস থেকে পাঠানো শুরু হয়েছে। অন্যান্য দল অবশ্য মনোনয়নের সময় বাড়ানোর আর্জি এখও জানায়নি। উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়া কেন্দ্রে ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ) প্রার্থী পিয়ারুল ইসলামকে সমর্থনের কথা এ দিনই আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করেছে বামফ্রন্ট। পিয়ারুলের মনোনয়নের জন্য আজ, বৃহস্পতিবার বসিরহাটে উপস্থিত থাকার কথা আইএসএফের চেয়ারম্যান ও বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকীর।
উত্তর ২৪ পরগনারই অন্য কেন্দ্র নৈহাটিতে মনোনয়ন ঘিরে উঠে এসেছে বৃহত্তর বাম ঐক্যের ছবি। ওই কেন্দ্রে সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনকে সমর্থন করছে বামফ্রন্ট। এর আগে নানা প্রশ্নে রাস্তায় একসঙ্গে মিছিল হয়েছে, বিক্ষোভ-অবস্থান হয়েছে। তবে বৃহত্তর বাম শক্তির এই নির্বাচনী সমঝোতার ছবি সাম্প্রতিক কালে এই রাজ্যে দেখা যায়নি। নৈহাটি বিধানসভা কেন্দ্রের লিবারেশন প্রার্থী দেবজ্যাতি মজুমদারের মনোনয়ন জমা দেওয়া উপলক্ষে মিছিল ও আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় উপস্থিত ছিলেন উত্তর ২৪ পরগা জেলায় সিপিএমের নেতা পলাশ দাস ও গার্গী চট্টোপাধ্যায়, ফরওয়ার্ড ব্লকের সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, সিপিআইয়ের গৌতম বিশ্বাস প্রমুখ। ছিলেন লিবারেশনের পলিটব্যুরো সদস্য কার্তিক পাল, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইন্দ্রাণী দত্তেরা। লিবারেশন নেতৃত্বের বক্তব্য, রাজ্যে এই প্রথম বামফ্রন্ট ও তার বহির্ভূত বাম শক্তির নির্বাচনী ঐক্য হয়েছে, যা বাম আন্দোলনে ‘নতুন আশা ও উদ্দীপনা’র সঞ্চার করছে। নৈহাটির বিভিন্ন এলাকায় ন্যায়-বিচারের দাবিতে সম্প্রতি বড় সংখ্যায় মহিলারা যেমন পথে নেমেছেন, তেমনই বামপন্থীরা তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে। মানুষের সহাবস্থান ও সম্প্রীতিকে বিনষ্ট করতে বিজেপির ‘চক্রান্ত’ ও তৃণমূল কংগ্রেসের ‘অপশাসনে’র বিরুদ্ধে এবং সাম্প্রতিক গণ-প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে তাঁদের ফল ভাল হবে বলে বাম নেতৃত্বের আশা।
প্রশ্ন উঠছে, আর জি কর-কাণ্ডের প্রভাব কি উপনির্বাচনে পড়বে? সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী অবশ্য বলছেন, ‘‘আর জি করের ঘটনার আগেও রাজ্যে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই হয়েছে। এ বার বৃহত্তর বাম ঐক্য হয়েছে। আর জি করের ঘটনায় মানুষ আবার দেখেছেন, রাজ্যের সরকার দুর্নীতি, দাপট, অপরাধের পক্ষে। প্রতিবাদের প্রভাব নির্বাচনে পড়বে কি না, নির্বাচনই বলবে। তবে সুষ্ঠু ভাবে ও শান্তিতে মানুষ নিজের ভোট দিতে পারলে তৃণমূলের বিপদ হবে, বিজেপিরও খুব সুবিধা হবে না।’’ তৃণমূলের নেতা কুণাল ঘোষের দাবি, চিকিৎসক আন্দোলনের মতো ‘বাম ও অতি-বামের আঁতাঁত’ প্রার্থী তালিকায় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। তবে তাতে ভোটের ফলে কোনও প্রভাব পড়বে না, ৬ আসনে জিতবে তৃণমূলই।