পর্যটন দফতরের এর যুগ্ম সচিবের কথায়, ‘‘গত সাত বছর ধরে রাজ্যের পাহাড় এবং সমতল এলাকায় হোম-স্টে গড়ায় নানা ভাবে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। সরকার আর্থিক সাহায্যও করেছে। এ বার তা ঠিকঠাক হয়েছে কি না, দেখা হবে।’’ তিনি জানান, বিষয়টিকে সমীক্ষা বলা হলেও, আদতে এটি একটি ‘অডিট’। ২০১৭ সালে ‘ওয়েস্টবেঙ্গল হোম-স্টে পলিসি’ তৈরি হয়। পরে ২০১৯ এবং ২০২২ সালে সংযোজন, সংশোধন করে আইন তৈরি হয়েছে। করোনা-সংক্রমণের পর্বে পর্যটন শিল্প ধুঁকতে শুরু করে। শিল্পের সঙ্গে জড়িতেরা বিপাকে পড়েন। সে সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ‘হোম-স্টে’ তৈরিতে উৎসাহ দেওয়া হয়। নীতি মেনে ‘হোম-স্টে’ তৈরি করে তা সরকারি ভাবে নথিভুক্ত করানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। নথিভুক্ত প্রতিটি ‘হোম-স্টে’-কে পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য এক লক্ষ টাকা দেয় সরকার। গত ১২ সেপ্টেম্বর অবধি রাজ্যের ২৩টি জেলায় নথিভুক্ত ‘হোম-স্টে’র সংখ্যা ২,৩৭৩। সবচেয়ে বেশি রয়েছে কালিম্পংয়ে, ১,০৭০টি। সবচেয়ে কম পশ্চিম বর্ধমানে তিনটি। দার্জিলিঙে ৩১০, জলপাইগুড়িতে ১৩৮, ঝাড়গ্রামে ১০২, বীরভূমে ৪৭, পুরুলিয়াতে ৩৮টি-সহ রাজ্যের ২৩টি জেলায় ‘হোম-স্টে’ রয়েছে।
পর্যটন দফতর সূত্রের খবর, গত তিন বছর ‘হোম-স্টে’ নিয়ে সরকারের নানা স্তরে একের পরে এক অভিযোগ এসেছে। যেমন— সরকারি নথিভুক্ত বহু ‘হোম-স্টে’ লিজে দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে রোজগার করছেন বাড়ির মালিক, যা বেআইনি। কিছু ‘হোম-স্টে’-তে বুকিংয়ের সময় নানা পরিষেবার কথা বলা হলেও, বাস্তবে তা মিলছে না বলে অভিযোগ। নীতি অনুযায়ী, ‘হোম স্টে’-তে এক থেকে ছ’টি ঘর বা ১২ শয্যা সর্বোচ্চ থাকার কথা। অভিযোগ, সেখানে ঘরের সংখ্যা বাড়িয়ে হোটেল বা রিসর্টের আকারে ব্যবসা জোড়া হয়েছে। সরকার থেকে পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য পাওয়া এক লক্ষ টাকা অন্য খাতে খরচের অভিযোগও এসেছে। সে প্রেক্ষিতেই সমীক্ষায় উদ্যোগী হয়েছে সরকার।
পর্যটন দফতরের এক সহ-অধিকর্তা বলেন, ‘‘প্রত্যেক জেলাশাসকের কাছ থেকে তালিকা নিয়ে হোম-স্টে পলিসি মেনে সমীক্ষা হবে। সমীক্ষার রিপোর্ট দেখে, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’