আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঘণ্টায় ১২ কিলোমিটার বেগে গত ছ’ঘণ্টায় পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর থেকে উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে আরও সরেছে ‘দানা’। আবহবিদদের অনুমান, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকালের মধ্যে এটি স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে। ওড়িশার ভিতরকণিকা থেকে ধামারার মধ্যে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড়টি। ‘ল্যান্ডফল’-এর সময় ‘দানা’র গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার। দমকা হাওয়ার গতি সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটারে পৌঁছতে পারে।
‘দানা’র সম্ভাব্য গতিপথও জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ সর্বোচ্চ গতিবেগে পৌঁছবে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। দমকা হাওয়ার বেগ পৌঁছবে ঘণ্টায় ১২৫ কিলোমিটারে। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ উপকূল থেকে আর মাত্র কিছু দূরেই থাকবে ‘দানা’। সে সময় ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১০০-১১০ কিলোমিটার। শুক্রবার ভোর পর্যন্ত একই বেগে তাণ্ডব চালাবে ‘দানা’। তার পর শক্তি হারিয়ে শুক্রবার বিকেলের মধ্যেই সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ নেমে আসবে ঘণ্টায় ৭০-৮০ কিলোমিটারে।
বৃহস্পতিবার সকালে ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে হাওয়ার গতিবেগ ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার হতে পারে। তবে সন্ধ্যার পর পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা। সেই সময় উত্তর ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলায় হাওয়ার গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার ছাড়াতে পারে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি এবং বাঁকুড়াতেও ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার বেগে হাওয়া বইতে পারে। দমকা হাওয়ার গতিবেগ পৌঁছতে পারে ৮০ কিলোমিটারে।
আসন্ন ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই মেঘাচ্ছন্ন কলকাতার আকাশ। শুরু হয়েছে বৃষ্টিও। রাজ্যের সমুদ্র উপকূলবর্তী দুই জেলা পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ অংশেও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। দুই জেলাতেই মাঝেমধ্যে ঝোড়ো হাওয়া বইছে। বৃহস্পতি এবং শুক্রবার দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে দুর্যোগের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। অতি ভারী বৃষ্টির (২০ সেন্টিমিটারের বেশি) লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে দুই মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায়। দু’দিনই ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির (৭-২০ সেন্টিমিটার) পূর্বাভাস রয়েছে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা এবং ঝাড়গ্রামে। দিনভর ভারী বৃষ্টি চলবে দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অংশেও।