এই সময়: মোবাইলে আসেনি ওটিপি অথবা আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত কোনও এসএমএস। তা সত্ত্বেও ব্যাঙ্ক থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিল ১৪ লক্ষ টাকা! একটি বেসরকারি ব্যাঙ্ক থেকে সেই টাকা আবার ট্রান্সফার হয় পাঁচটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে। অভিনব কায়দায় এই ব্যাঙ্ক জালিয়াতির এই ঘটনায় এক কলেজ পড়ুয়া-সহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করলেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা।পুলিশের দাবি, এদের বয়স ১৯ থেকে ২৭ বছরের মধ্যে। তাদের মধ্যে দু’জন আবার ভিন রাজ্য থেকে কলকাতায় এসে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকছিল বলে দাবি তদন্তকারীদের। পুলিশ সূত্রের খবর, ব্যাঙ্ক প্রতারণার ঘটনাটি ঘটে গত মে মাসের। অভিযোগকারী পুলিশকে জানান, তাঁর কোম্পানির অ্যাকাউন্ট থেকে ওই ১৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্রথমে বউবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের হলেও পরে তদন্তে নামেন গোয়েন্দারা।
এই ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করার পর জানা যায়, আরটিজিএস পদ্ধতির মাধ্যমে সেই টাকা ট্রান্সফার করা হয়েছিল। কিন্তু কেন ওই ব্যক্তির ফোনে লেনদেন সংক্রান্ত কোনও এসএমএস এল না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, এই চক্রের সঙ্গে ব্যাঙ্কের কোনও কর্মী জড়িত থাকতে পারেন। প্রতারণা করে হাতিয়ে নেওয়া টাকা সরানোর জন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ‘ভাড়া’ও নেওয়া হয় বলে দাবি পুলিশের।
তদন্তকারীরা জানতে পারেন, অভিযোগকারীর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের শাখায় অন্য একটি অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার হয়ে যায়। সেই অ্যাকাউন্টটি খোলা হয়েছিল মহম্মদ শাহিদ নামে একজনের নামে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অভিষেক সাউ নামে আর একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শাহিদ দাবি করেন, এই কারবারের সঙ্গে তিনি জড়িত নন। তবে তাঁর নাম ব্যবহার করে অ্যাকাউন্টটি খোলা হয়েছিল। বছর চব্বিশের অভিষেক আসানসোলের একটি কলেজের পড়ুয়া। সে অভিজিৎ প্রসাদ নামে অন্য একজনের সঙ্গে যোগসাজশ করে প্রতারণার ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে পুলিশের দাবি। চক্রের মাস্টার মাইন্ডও সে। তাদের দলে ছিল মুঙ্গের বাসিন্দা সাব্বির আলম এবং মুজফফরপুরের রূপেশ কুমার।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দু’জনে কেষ্টপুরে ঘর ভাড়া নিয়েছিল। তাদের উপরে বিভিন্ন লোকজনের অ্যাকাউন্ট ‘ভাড়া’ নেওয়ার দায়িত্ব ছিল। এই ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছে আসানসোলের বাসিন্দা অমৃত চট্টোপাধ্যায়ও। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৮ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।