‘দানা’ ল্যান্ডফলের আগেই ৬৫ জন অন্তঃসত্ত্বাকে সরাল প্রশাসন, সুন্দরবনে উদ্যোগ
হিন্দুস্তান টাইমস | ২৪ অক্টোবর ২০২৪
আজ, বৃহস্পতিবার মাঝরাত থেকে আগামীকাল, শুক্রবার সকালের মধ্যে ওড়িশার ভদ্র্রক জেলার ধামড়া এবং ভিতরকণিকার কাছাকাছি কোনও জায়গায় উপকূলে আছড়ে পড়বে তীব্র ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। এই পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। তবে এই ঘূর্ণিঝড়ের জেরে সাগর থেকে দিঘা এবং কলকাতায় ভাল প্রভাব পড়বে বলে জানা গিয়েছে। এই আবহে ‘দানা’র দাপটে যাতে প্রাণহানি না ঘটে তার জন্য তৎপরতা প্রশাসন। ইতিমধ্যেই উপকূলের নানা এলাকা থেকে সরানো হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। এমনকী অন্তঃসত্ত্বা এবং বৃদ্ধ–বৃদ্ধাদের জন্য নেওয়া হচ্ছে বিশেষ ব্যবস্থা। তাঁদের সরিয়ে আনা হচ্ছে নিরাপদ স্থানে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ চলাকালীন অন্তঃসত্ত্বা এবং বৃদ্ধ–বৃদ্ধারা অসুস্থ হয়ে পড়লে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যেতে সমস্যা হতে পারে। তাই বিপদ আসার আগে থেকেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন। সুন্দরবনের সাগরদ্বীপ থেকে ৬৫ জন অন্তঃসত্ত্বা বধূকে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে সাগর গ্রামীণ হাসপাতালে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে মা–শিশুর যাতে কোনও ক্ষতি না হতে পারে তার জন্যই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের লাল ও কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া এবং কলকাতায় ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়বে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলে ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ১১০ কিমি হতে পারে।
অন্যদিকে আবহাওয়া দফতরের এই পূর্বাভাস পাওয়ার পরই আজ, বৃহস্পতিবার এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নিরাপদে আজ ৬৫ জন অন্তঃসত্ত্বা বধূদের সাগর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন গ্রামবাসীরা। এমন উদ্যোগ আগে কখনও সেভাবে দেখা যায়নি। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা হবিবুর রহমান বিশ্বাস জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র ব্যাপকতা সবচেয়ে বেশি টের পাওয়া যাবে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার ভোরের মধ্যে। এটা শোনার পর থেকেই উদ্যোগী হয়েছে জেলা প্রশাসন। এখন সাগর গ্রামীণ হাসপাতালে অন্তঃসত্ত্বাদের নিয়ে আসায় তাঁদের আর কোনও বিপদের ঝুঁকি থাকল না।
এছাড়া আগের ঘূর্ণিঝড়ের অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখে তাই আগে থেকে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। প্রাণহানি ঠেকাতে জেলা প্রশাসনের অফিসাররা এখন থেকে বদ্ধপরিকর। তাই উপকূল এলাকায় একাধিক সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এই কাজ শুরু করে দেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। তার সঙ্গে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায় ঘুরে ঘুরে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের চিহ্নিত করা হয়। তারপর তাঁদের সকলকে সাগর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। আজ সকাল পর্যন্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা গ্রামে গ্রামে ঘুরে অন্তঃসন্ত্বা মহিলাদের চিহ্নিত করার কাজ করেছে।