কলকাতার পর্যটকের অস্বাভাবিক মৃত্যু দার্জিলিংয়ে, শুরু হয়েছে পুলিশের জোরদার তদন্ত
হিন্দুস্তান টাইমস | ২৪ অক্টোবর ২০২৪
ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ ল্যান্ডফল করার আগেই দার্জিলিংয়ে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে এক পর্যটকের। এই বিষয়টি নিয়ে এখন জোর সোরগোল পড়ে গিয়েছে। কারণ তিনি কলকাতার বাসিন্দা। দার্জিলিংয়ের অদূরে তাকদা লাগোয়া লামাহাটায় এই পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। এই পর্যটকের নাম অশোক সাধুখাঁ । কলকাতার হাতিবাগান এলাকায় তাঁর বাড়ি। তিনি অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ক কর্মচারী বলে জানা গিয়েছে। গত ২০ অক্টোবর অশোকবাবু তাঁর দুই মেয়ে, জামাই, ছোট ভাই এবং ভাইজিকে সঙ্গে নিয়ে দার্জিলিংয়ে বেড়াতে এসেছিলেন। গতকাল বুধবার সকলের ট্রেন ধরে কলকাতায় ফেরার সূচি ছিল। কিন্তু তা শোকে পরিণত হল।
স্থানীয় সূত্রে খবর, লামাহাটায় বেড়াতে এসে একটি পাহাড়ের উপরে তৈরি ফুলের বাগান দেখতে যান অশোকবাবু। কিন্তু ফুলের বাগান দেখে ফেরার পথে পাহাড়ি রাস্তায় টাল সামলাতে পারলেন না অশোকবাবু। তখনই পড়ে যান। পরিবারের অন্য সদস্যরা তাঁকে উদ্ধার করে দার্জিলিং সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসকরা সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান রাজেশ চৌহান এই ঘটনায় বলেন, ‘গত ২০ অক্টোবর পরিবার নিয়ে অবসর কাটাতে দার্জিলিংয়ে এসেছিলেন অশোকবাবু। বুধবার সকলের কলকাতায় ফেরার কথা ছিল। মঙ্গলবার লামাহাটা গিয়েছিলেন ওই পর্যটক। সেখানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে দার্জিলিং জেলা হাসপাতালে আনা হয়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।’
পরিবার এবং স্থানীয়রা পড়ে যাওয়ার কথা বললেও জিটিএ’র ডেপুটি চেয়ারম্যান তা বলেননি। এখানে একটা অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে। তবে এই ঘটনার পর বুধবার দার্জিলিং জেলা হাসপাতালের মর্গে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের সন্দেহ হচ্ছে যে, সম্ভবত হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ওই পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের জামাই সুব্রত সাধুখাঁর বক্তব্য, ‘উনি সবার আগে ফুলের বাগান দেখতে পাহাড়ে ওঠেন। আমরা যখন উপরে উঠছিলাম তখন আমার শ্বশুরমশাই বাগান দেখে নীচে নামছিলেন। কী করে পড়ে গেলেন সেটা বুঝতে পারছি না। হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, শ্বশুরমশাই আর বেঁচে নেই।’
এছাড়া এই বিষয়টি জানাজানি হতেই পুলিশ তদন্তে নেমে পড়ে। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ। তারপর ময়নাতদন্ত রিপোর্টও দেখে পুলিশ। বেড়াতে এসে এমন শোকের আবহ তৈরি হবে সেটা পরিবারের সদস্যরা ভাবতেও পারেননি। তবে পুলিশ দুটো বিষয় তদন্তে করে দেখছেন। এক, ওই পর্যটক সত্যিই পড়ে গিয়েছিল কিনা। দুই, হৃদরোগে আক্রান্ত হলেন কেমন করে। তার জন্য অন্যান্য পর্যটক যাঁরা লামাহাটায় গিয়েছিলেন তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। কারণ কোনও অসঙ্গতি রাখতে চায় না পুলিশ।