অভিযুক্ত নিয়ে মমতা ঠিক বলেছেন, আইন বোঝাল TMC সেল, মনীষাকে প্রাইভেটে পড়ার খোঁটা
হিন্দুস্তান টাইমস | ২৪ অক্টোবর ২০২৪
অভিযুক্ত কাকে বলা যায়? কাকে দণ্ডিত বলা হয়? আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার মধ্যেই নবান্নে জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সেই ‘পার্থক্য’ ব্যাখ্যা করে রাতারাতি লাইমলাইটে চলে আসেন মনীষা ঘোষ। আর এবার সেই জুনিয়র ডাক্তারকেই আক্রমণ শানালেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সম্পাদক সন্দীপন মিত্র। একটি নথির লেখনী উল্লেখ করে তিনি দাবি করলেন, কোনও প্রমাণ ছাড়া কাউকে অভিযুক্ত বলা যায় না বলে মুখ্যমন্ত্রী যে মন্তব্য করেছিলেন, সেটা তিনি ঠিকই বলেছিলেন। সেইসঙ্গে মনীষাকে খোঁচা দিয়ে তিনি বললেন যে ‘টাকা দিয়ে প্রাইভেটে পড়লে’ এরকমই হাল হয়। আর সেই 'শিক্ষা' নিয়ে ‘সাতবারের সাংসদ, চারবারের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, তিনবারের মুখ্যমন্ত্রীকে আইন শেখাতে’ এলে এমনই হবে বলে কটাক্ষ করেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সম্পাদক।
গত সোমবার নবান্নে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে মমতার বৈঠকের পরে বুধবার ইন্ডিয়ান কানুনের একটি প্রতিবেদন উল্লেখ করে সন্দীপ বলেন, ‘ভুল বলেছিলেন জুনিয়র ডাক্তার মনীষা ঘোষ। কারও নামে অভিযোগ উঠলেই আইনত তাঁকে অভিযুক্ত বলা যায় না। টাকা দিয়ে প্রাইভেটে পড়লে এই হয়। সাতবারের এমপি, চারবারের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, তিনবারের মুখ্যমন্ত্রীকে আইন শেখাতে এসেছে!’
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সম্পাদক যে নথি উদ্ধৃত করেন মনীষাকে আক্রমণ শানান, তাতে বলা হয়েছে, ‘তদন্তের পরে তদন্তকারী অফিসার যখন চার্জশিট জমা দেন এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে বিচারাধিকারের আওতায় আনা হয়, তখন সেই ব্যক্তি অভিযুক্ত সংজ্ঞার মধ্যে আসেন।’
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, যে অংশটি উদ্ধৃত করে মনীষাকে আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সম্পাদক, সেটি পাটনা হাইকোর্টের ২০১৬ সালের একটি মামলার রায় থেকে নেওয়া হয়েছে। ধর্মেশকুমার সিং বনাম বিহার সরকারের মামলায় জানানো হয়েছিল, এটা উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক যে যদি কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্ট রুজু করা হয়, তাহলে ওই মামলায় তাঁকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সংশ্লিষ্ট মামলায় তদন্তের আবেদনকারীকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবেই বিবেচনা করা হচ্ছে। তাঁকে 'অভিযুক্ত' হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে না।
সোমবারের বৈঠকে স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে 'অভিযুক্ত' হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন এক জুনিয়র ডাক্তার। সেইসময় মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, 'একটা মানুষকে অভিযুক্ত প্রমাণ করার আগে তাকে অভিযুক্ত বলা যায় না।' সেইসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, 'তুমি তোমার কমপ্লেন করতে পারো। কিন্তু আদৌও সে অভিযুক্ত কিনা, সেটার কোনও এভিডেন্স পাওয়া যায়নি।'
পালটা মনীষা বলেছিলেন, ‘যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, সেই ব্যক্তিকে আমরা অভিযুক্ত বলব। যদি সেই অভিযোগ প্রমাণ হয়, তখন সেই ব্যক্তিকে আমরা বলব দোষী। সুতরাং যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তাঁকে অভিযুক্ত বলে উল্লেখ করাটা গ্রামাটিক্যালি এবং লিগ্যালি ভুল বলে আমাদের মনে হয় না।’