ভোজনরসিক বাঙালির কাছে উত্তরবঙ্গের মাছ মানেই বোরোলি। বাঙালির আড্ডায় মৎস্য-প্রেমের আলোচনা হলেই, ইলিশের প্রসঙ্গ যেমন ওঠে, তেমনই পিছিয়ে থাকে না বোরোলিও। তবে এই বোরোলির সাম্রাজ্য়ে এবার ইলিশের এন্ট্রি! উত্তরবঙ্গের মানসাই নদীতে সদ্য উঠেছে ইলিশ মাছ। সাইজের খবর শুনলেও লোভ সামলাতে পারবেন না! ৪০০ গ্রাম থেকে ১ কেজির মধ্যে ছিল এই ইলিশ মাছ। স্বভাবতই মানসাইয়ের মিঠে জলে রুপোলি শস্যের দেখা মেলায় খুশি মৎস্যজীবীরা।
সোমবার ও মঙ্গলবার উঠেছিল ৪০ কেজি মাছ। পরে বুধবার উঠেছে আরও ১০ কেজি মাছ। সদ্য কোচবিহারের মাথাভাঙায় এই ইলিশ উঠেছে চাগড় গ্রাম পঞ্চায়েতে। সেখানে ছাটঘাটে মানসাই নদীর উপরে থাকা একটি রেলব্রিজের কাছে বয়ে যাওয়া মানসাই নদী থেকে উঠেছে এই পরিমাণ ইলিশ। ৪০০ গ্রাম থেকে ১ কেজির এই ইলিশের দেখা উত্তরবঙ্গে মেলায় হইহই পড়ে গিয়েছে সেখানের বাজারে। বাজারে এই মাছ বিক্রি হয়েছে ৬০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি দরে। স্থানীয় অনেকের মতে, মাথাভাঙা বাজারে এই ইলিশ নিয়ে যাওয়ার আগেই নদীর চরেই বহু ইলিশ বিক্রি হয়ে যায়।
কিছু বছর আগে, মানসাই নদীতে দেখা গিয়েছিল ইলিশের। সালটি ছিল ২০২১। কোভিডকালে মানসাইতে জেলেদের জালে ধরা পড়েছিল ইলিশ। তবে এবার অনেকটা পরিমাণ ইলিশ মেলায়, এলাকায় আলোচনার শেষ নেই।
ইলিশ নিয়ে যখনই আলোচনা হয়, তখনই গঙ্গা-পদ্মার নাম ওঠে। নাম আস রূপনারায়ণের। নাম ওঠে, কোলাঘাটের। তবে সদ্য মানসাই ছাড়াও চলতি মাসের গোড়ার দিকে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের দামোদর নদেও ইলিশ দেখা দিয়েছে।
এদিকে, নোনা জলে যে মাছ থাকে, সেই ইলিশ কেন হঠাৎ মিঠে জলে আসতে যাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। কোচবিহার জেলা মৎস্যদফতর বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নিতে শুরু করেছে। তারা বলছে, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। জেলা মৎস্য আধিকারিক প্রণব বিশ্বাস বলেন,'এর আগেও মানসাই নদীতে ইলিশের দেখা মিলেছিল। দু-তিনটির বেশি নয়।' এদিকে, প্রশ্ন থাকছে, মানসাইয়ের ইলিশের স্বাদ কেমন? এক ক্রেতার দাবি, এই ইলিশের স্বাদ কোলাঘাট বা বাংলাদেশের ইলিশের মতো নয়, কিছুটা খেতে নোনতা।