'সাধনাসঙ্গী’ করে ধর্ষণের অভিযোগ বর্ধমানের তরুণীর, গ্রেপ্তার ধর্মগুরু
এই সময় | ২৫ অক্টোবর ২০২৪
সাধনার সঙ্গী করে সারা জীবনের দায়িত্ব নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক তরুণীকে দিনের পর দিন ধর্ষণের অভিযোগ। চাঞ্চল্যকর অভিযোগ পূর্ব বর্ধমানের এক তরুণীর। উত্তরপ্রদেশের এক ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠায় তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর নাম গোবিন্দবল্লভ শাস্ত্রী। বুধবার কাটোয়া মহকুমা আদালতে ধৃতকে ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠায়।পুলিশ তদন্ত নেমে জানতে পেরেছে উত্তরপ্রদেশের বৃন্দাবনের বাসিন্দা গোবিন্দ বল্লভ শাস্ত্রী সমাজ মাধ্যমে ধর্মীয় 'কথাবাচক' হিসেবে পরিচিত। তাঁর আধ্যাত্মিক প্রবচনে আকৃষ্ট হয়ে যোগাযোগ করেছিলেন ওই তরুণী। ওই তরুণী ইউটিউবে নিয়মিত ধর্মীয় 'কথাবাচক'দের প্রবচন শুনতেন। তরুণী তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন।
গোবিন্দবল্লভ দেশ জুড়ে প্রবচন দিয়ে বেড়াতেন। পশ্চিমবঙ্গেও এসেছেন একাধিকবার। ২০২৩ সালে মে মাস নাগাদ বীরভূম জেলার ভাগবত পাঠের আসরে আসেন গোবিন্দ বল্লভ। ধর্মগুরু ওই তরুণীকে সেখানে আসতে বলেন। সেখানেই গোবিন্দবল্লভের সঙ্গে তাঁর প্রথম মুখোমুখি সাক্ষাৎ হয়। তারপর গোবিন্দবল্লভ শাস্ত্রীর 'ভক্ত' থেকে শিষ্যা হয়ে যান তরুণী।
তরুণী এও জানিয়েছেন, ওই বছরের জুন মাসে মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙ্গা এলাকায় প্রবচন শোনাতে আসেন গোবিন্দবল্লভ শাস্ত্রী। সেখানেই তরুণীকে তিনি দীক্ষা দেন। আজীবনের দায়িত্বভার নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে 'সাধনাসঙ্গী' করার জন্য তিনি ওই দিন তরুণীকে রাজিও করিয়ে ফেলেন। তরুণীর অভিযোগ, এরপর তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে দিনের পর দিন ধরে তাঁকে ধর্ষণ করে যাচ্ছিলেন ওই গুরুজী। গত জুলাই মাসে তরুণী গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন। দীর্ঘদিন হাসপাতালে তাঁকে চিকিৎসাধীন থাকতে হয়। কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠার পর গত ২০ জুলাই তিনি মঙ্গলকোট থানায় গোবিন্দবল্লভ শাস্ত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন।
তরুণীর আনা অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার (বিএনএস) অনুযায়ী ধর্ষণ, আত্মহত্যায় প্ররোচনা, প্রতারণা, অপমানসূচক কথাবার্তা বলা ইত্যাদি একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করে। গ্রেপ্তার এড়াতে আগাম জামিন চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করেছিলেন গোবিন্দবল্লভ। বিচারক তার জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন। মঙ্গলবার কাটোয়া মহকুমা আদালতে আত্মসমর্পণ করেন উত্তরপ্রদেশের বৃন্দাবনের ওই গুরুজী।