শিকলে বাঁধা থাকে প্রতিমার পা, দেবীর রূপ ভয়ংকর! জানুন হুগলির 'বৈদ্যদের পুজো'র ইতিহাস
প্রতিদিন | ২৫ অক্টোবর ২০২৪
সুমন করাতি, হুগলি: শুরু হয়েছিল ৪০০ বছর আগে। নিয়ম মেনে আজও কামারপুকুরের গুপ্তবাড়িতে পূজিতা হন শ্যামা। এই পুজো ‘বৈদ্যদের পুজো’ পুজো(Kali Puja 2024) নামেই পরিচিত স্থানীয়দের কাছে।
কামারপুকুরের গুপ্ত বাড়ির অনেকেই ছিলেন পেশায় বৈদ্য বা চিকিৎসক। সেই থেকেই পুজোর এই নাম। কথিত আছে, এই পুজোর ঘট তোলার আগেই প্রতিমার পা লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়। কারণ, দেবীর রূপ ভয়ংকর। রক্তঝরা জিভ, ঠোঁটের দুদিকে থাকে রক্তে ভেজা শাড়ির আঁচলের অংশ। তন্ত্র বিধিতে পূজিতা দেবীর অঙ্গসজ্জায় থাকে তির। পুজো হয় একাসনে। ঘট তুলে পুরোহিত সেই যে পুজোয় বসেন, সব শেষে সুতো কেটে তবেই উঠতে পারেন। গুপ্ত পরিবারের ১৩ তম প্রজন্মের বংশধর অপূর্ব গুপ্ত বলেন, “বংশানুক্রমে শুনে আসছি, এটা রণক্ষেত্রের মায়ের পুজো। পুজোর আড়ম্বর নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা থাকে না। কিন্তু আচার, নিষ্ঠা-ভক্তিতে ত্রুটি থাকা চলবে না। ভয়-ভীতির জন্যই মাকে লোহার শিকল বেঁধে রাখার রীতি চলে আসছে বছরের পর বছর ধরে।’’
কথিত আছে, একটা সময়ে পরিবারের সদস্যা এক মহিলা খোলা চুলে সন্ধে দিতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন। রাতে তাঁর খোঁজ মেলেনি। বাড়ির এক সদস্য বলেন, “পর দিন সকালে সেই মহিলার শাড়ির অংশ প্রতিমার ঠোঁটে আটকে থাকতে দেখা যায়। তাতেই বোঝা যায়, আচারে ত্রুটি হওয়ায় দেবী তাঁকে খেয়ে ফেলেছেন। তাই এই দেবীর পুজোয় নিষ্ঠাই সব।’’