আরও এগোচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার মাঝরাত থেকে শুক্রবার সকালের মধ্যে তা আছড়ে পড়তে পারে ওড়িশা উপকূলে। ল্যান্ডফল হতে পারে ধামরা ও ভিতরকণিকার মাঝামাঝি কোনও স্থানে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাংলার উপকূলবর্তী দুই জেলা পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং সংলগ্ন জেলাগুলিতে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থাকছে। প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা কলকাতাতেও। এবার আবার খেটো ধূতি পরে বেরিয়ে পড়লেন আয়লার হিরো। ‘দানা’ ঘূর্ণিঝড় ল্যান্ডফলের আগেই রায়দিঘির প্রত্যন্ত এলাকা চষে বেড়ালেন প্রাক্তন মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। ঘুরে দেখলেন নদী বাঁধ এলাকা। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে সতর্ক করলেন। পাশে আছেন বলেও জানালেন।
এদিকে দুর্যোগের আশঙ্কায় আগাম সতর্কতা নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে খোলা আছে কন্ট্রোল রুম। নবান্নেও খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। সেখান থেকে যোগাযোগ রাখা হবে জেলাগুলিতে। বিপদ যাতে না ঘটে তার জন্য সব ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র পূর্বাভাসের মধ্যেই রায়দিঘির কুমড়োপাড়ার নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে সতর্ক করেন কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। আয়লা ঘূর্ণিঝড়ের সময় এই কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়কেই দেখা গিয়েছিল জলে নেমে মানুষের উপকার করতে। তখন থেকে আজ পর্যন্ত যত ঘূর্ণিঝড় এসেছে বঙ্গে বুক পেতে নিয়েছেন ক্লান্তিহীন কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। তাই তো আবার ‘দানা’ আসছে জেনে ময়দানে নেমে পড়েছেন বৃদ্ধ কান্তিবাবু।
অন্যদিকে নবান্নের হেল্পলাইন নম্বর ২২১৪৩৫২৬/১০৭০। জেলাগুলিতেও চালু করা হয়েছে হেল্পলাইন। আজ রাতে নবান্নে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী। এই আবহে আজ, বৃহস্পতিবার ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ নিয়ে সতর্ক এবং সচেতন করে কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের আগে প্রত্যেকবারই আমি থাকি। যদি রাতে ঝড় আসে কী হবে? পূবে হাওয়া বইলে নদী বাঁধ টপকে জল ঢুকবে। নদী বাঁধ ভাঙবে।’ মানুষজন যাতে সমস্যায় না পড়েন তাই সেই ভাবনা নিয়ে আজও গ্রামেগঞ্জে ঘুরলেন কান্তিবাবু। অসুবিধা হলে তাঁকে যেন জানায় সবাই সেই বার্তাও দিয়েছেন তিনি।
এছাড়া বিদ্যুতের বিপর্যয় এবং লোডশেডিং, ফল্ট হলে ডব্লিউবিএসইডিসিএল হেল্পলাইন নম্বর—৮৯০০৭ ৯৩৫০৩ এবং ৮৯০০৭ ৯৩৫০৪, আর সিইএসসি’র হেল্পলাইন নম্বর—০৩৩ ৩৫০১ ১৯১২, ০৩৩ ৪৪০৩ ১৯১২, ১৮৬০৫০০১৯১২ এবং ১৯১২ ফোন করতে হবে। আয়লা, আমফান, যশের মতো ঘূর্ণিঝড় সামলেছে সুন্দরবন। এবারও আতঙ্ক তৈরি হয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ নিয়ে। তবে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে দেখা করে আশ্বস্ত করে গিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ বাপি হালদার। নদী বাঁধ দেখে সেচ দফতরের অফিসারদের দ্রুত মেরামত করার নির্দেশ দেন তিনি। মানুষের আশ্রয়ে রিলিফ সেন্টার খুলেছেন। ত্রাণের ব্যবস্থা করেছেন।