• ভয়ঙ্কর গতিতে দ্রুত ধেয়ে আসছে, মধ্যরাতেই স্থলভাগে আছড়ে পড়ছে দানা
    আজ তক | ২৫ অক্টোবর ২০২৪
  • স্থলভাগের সঙ্গে আরও দূরত্ব কমছে ‘দানা’র। আবহাওয়া দপ্তর জানাচ্ছে, পারাদ্বীপ থেকে ৫০ কিলোমিটার পূর্ব দিকে, ধামরা থেকে ৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব দিকে ও সাগরদ্বীপের ১৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড়। ১৩ কিমি প্রতি ঘণ্টা গতিবেগে বঙ্গোপসাগরের উপর দিয়ে স্থলভাগের দিকে এগিয়ে আসছে ‘দানা’। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শুক্রবার সকালের মধ্যে এটি তীব্র ঘূর্ণিঝড় হিসেবেই ওডিশা উপকূলে তার আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া অফিস। ল্যান্ডফলের স্থান ভিতরকণিকা ও ধামারাতে। ইতিমধ্যে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়েছে ধামরা সমুদ্র সৈকতে। সমুদ্রতটে দৃশ্যমানতা কার্যত নেই বললেই চলে। বৃষ্টির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হাওয়ার দাপট।

    আলিপুর আবহাওয়া দফতরের বুলেটিন বলছে, শেষ ছ’ঘণ্টায় তার গতিবেগ ছিল ১৩ কিলোমিটার। এর আগে সমুদ্রের উপর দিয়ে ১২ কিলোমিটার গতিবেগে স্থলভাগের দিকে এগিয়ে আসছিল সে। এখন সমুদ্রের উপর ঝড়ের গতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২৫ কিলোমিটার। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শুক্রবার ভোরের মধ্যে স্থলভাগে আছড়ে পড়ার কথা তার।  শুক্রবার ভোরের মধ্যে ওড়িশার ভিতরকণিকা এবং ধামারা দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে দানা’। স্থলভাগে আছড়ে পড়ার সময়  গতি হতে পারে ঘণ্টায় ১০০-১১০ কিলোমিটার। সর্বাধিক গতি পৌঁছতে পারে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার। দানার প্রভাবে ইতিমধ্যেই ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে ওড়িশার উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে। বিশেষত, পারাদ্বীপ, কেন্দ্রাপড়া এবং ভদ্রকে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুরে ঝড়ের গতি হতে পারে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার। দমকা হাওয়ার গতি হতে পারে মাঝেমধ্যে ১২০ কিলোমিটার। ‘ল্যান্ডফল’-এর প্রক্রিয়া যখন চলবে, সেই সময় পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরদ্বীপ, সুন্দরবনে ঝড়ের গতি হতে পারে ঘণ্টায় ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার। মাঝেমধ্যে দমকা হাওয়ার গতি হতে পারে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাকি অংশে সে সময় ঝড়ের গতি হতে পারে ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার। দমকা হাওয়ার গতি হতে পারে ৯০ কিলোমিটার। কলকাতায় সেই সময় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড় হতে পারে। মাঝেমধ্যে দমকা হাওয়া বইতে পারে ৮০ কিলোমিটার গতিবেগে।

    'দানা' ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব বাংলায় সবথেকে বেশি পড়ার কথা দুই মেদিনীপুর সহ দুই ২৪ পরগনায়। এই কারণেই অনেক আগে থেকে দিঘা, মন্দারমণি থেকে পর্যটকদের সরানো হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনও নানাবিধ ব্যবস্থা নিয়েছে। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরে ঝড়ের গতি হতে পারে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার। ১২০ কিমি গতিতে মাঝেমধ্যে দমকা হাওয়া দিতে পারে। ‘ল্যান্ডফল’-এর সময় পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরদ্বীপ, সুন্দরবনে ঝড়ের গতি হতে পারে ঘণ্টায় ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার। মাঝেমধ্যে দমকা হাওয়ার গতি হতে পারে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার। এর পাশাপাশি পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ১-২ মিটারএবং দক্ষিণ ২৪ পরগণার কিছু অংশে ০.৫-১ মিটার জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা রয়েছে।

    ঘূর্ণিঝড় দানা’র কোনও ‘চোখ’ থাকবে না। বৃহস্পতিবার রাতেই ওড়িশার উপকূলে তার ‘ল্যান্ডফল’ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যেতে পারে। তা চলবে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত। এর ফলে ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার মৌসম ভবনের ডিজি মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানিয়েছেন, ‘চোখ’ না থাকলেও ‘ডেনা’ তাণ্ডব চালাবে উপকূলে। ভারী বৃষ্টি এবং ঝোড়ো হাওয়ার সতর্কতা থাকছে। ‘ল্যান্ডফলের’ পর ঘূর্ণিঝড় দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে বাঁক নেবে। তার পর ক্রমে তার শক্তিক্ষয় হবে। মৌসম ভবন জানিয়েছে, এই মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রে হাওয়ার গতি রয়েছে ঘণ্টায় ৯৫ থেকে ১০৫ কিলোমিটার। অর্থাৎ, সমুদ্রে ওই বেগে ঝড় বইছে। ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে হাওয়ার গতি ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার। যত সময় এগোবে, ঝড়ের তীব্রতা তত বাড়বে। উপকূলে এই ঝড়ের প্রভাবে হাওয়ার সর্বোচ্চ গতি হবে ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার, জানিয়েছে মৌসম ভবন।
  • Link to this news (আজ তক)