সংবাদদাতা, কাঁথি: কয়েকমাস আগে পূর্ণিমা কোটালের জেরে জলোচ্ছ্বাসে রামনগরের পর্যটনকেন্দ্র তাজপুরে বিস্তীর্ণ এলাকায় সমুদ্রের পাড় ভেঙে গিয়েছিল। ফের ঘূর্ণিঝড় ডানার প্রভাবে কী পরিস্থিতি হতে পারে, তা ভেবে আতঙ্কিত তাজপুর সহ আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা। সেবার ভাঙনের পর সেচদপ্তরের উদ্যোগে তাজপুরের কিছু জায়গায় ব্ল্যাকস্টোন ফেলে অস্থায়ী মেরামত হয়েছে। কিন্তু বাকি পাড়ের অনেকটা অংশই ভগ্ন অবস্থায় পড়ে আছে। এবার পরিস্থিতি ঘোরালো হলে পাড় ভেঙে লোকালয়ে জল ঢোকার আশঙ্কা রয়েছে। বৃহস্পতিবার জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সরেজমিনে এলাকা পরিদর্শন করেন। ডানার প্রভাবে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তাজপুর সহ সর্বত্র সমুদ্র ফুঁসছে। জলোচ্ছ্বাসে পাড় কিছুটা ভেঙে জল ঢুকছে। ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস তীব্র হলে এই দুর্বল সমুদ্রবাঁধ কি আদৌ তা প্রতিহত করতে পারবে? এই প্রশ্নই তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা। এদিন জেলা পরিষদের সভাধিপতি শঙ্করপুর মৎস্যবন্দর লাগোয়া সমুদ্রবাঁধের বেহাল পরিস্থিতিও পরিদর্শন করেন। ওল্ড ও নিউ দীঘা ঘুরে মানুষকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন। পুলিস আধিকারিকরাও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন। প্রশাসনের তরফে মাইকিং করে স্থানীয়দের অপেক্ষাকৃত সুরক্ষিত জায়গায় চলে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একাধিক বহুমুখী বিপর্যয় মোকাবিলা কেন্দ্রে তাজপুর সহ আশপাশের এলাকার বেশ কিছু পরিবারকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাজপুর সংলগ্ন জলাধার এলাকার বাসিন্দা তথা স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য তপন বড়াই বলেন, রাতে ডানার প্রভাবে জলোচ্ছ্বাস বাড়লে কী হবে, সেটা ভেবেই আমরা আতঙ্কিত। উত্তমবাবু বলেন, শুধু তাজপুর নয়, সর্বত্র জনপ্রতিনিধি, পুলিস, প্রশাসন ময়দানে নেমেছে। আমরা ডানা মোকাবিলায় সবরকমভাবে প্রস্তুত। উপকূল এলাকার মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সমুদ্রবাঁধের পরিস্থিতির বিষয়টি সেচদপ্তর জানে। তাদের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। গত বুধবার সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেছেন। রামনগর-১ এর বিডিও পূজা দেবনাথ বলেন, দুর্বল সমুদ্রবাঁধের দিকে আমাদের নজর রয়েছে। সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার মানুষকে কাছাকাছি নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। পানীয় জল, শুকনো খাবার মজুত রাখা, গৃহপালিত পশুকেও নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এদিন কাঁথি মহকুমা মৎস্যজীবী উন্নয়ন সমিতির চেয়ারম্যান আমিন সোহেল বিভিন্ন মৎস্যখটি পরিদর্শন করেন। মৎস্যজীবীদের বহুমুখী বিপর্যয় মোকাবিলা কেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শ দেন।