নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: রাস্তাজুড়ে সবুজ পতাকা, বেলুন হাতে হাজার হাজার মানুষ। কেউ নাচলেন বাজনার তালে। আবার কেউ স্লোগান দিলেন, ‘এবারের ভোটে জিতছে কে? সুজয় ছাড়া আবার কে!’ বৃহস্পতিবার উপনির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার মিছিলে জনসমাগমে বিরোধীদের ১০ গোল দিল তৃণমূল। মিছিলে ভিড় দেখে খুশি তৃণমূল নেতৃত্ব। দ্বন্দ্ব ভুলে রাস্তায় নেমেছে শাসকদলের সমস্ত গোষ্ঠী।
তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছে, মিছিলে পাঁচ থেকে সাত হাজার মানুষ এসেছিলেন। এদিন মিছিল শুরুর আগেই প্রার্থীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে শুভেচ্ছাবার্তা দেন রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া, জেলা পরিষদের সভাধিপতি প্রতিভারানি মাইতি, দলনেতা মহম্মদ রফিক সহ শাসকদলের নেতৃত্ব। মিছিল শেষে মহকুমা শাসকের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন প্রার্থী সুজয় হাজরা।
তৃণমূল প্রার্থী বলেন, জনসমাগম দেখে আমি আপ্লুত। সারা বছর মাঠে-ময়দানে মানুষের পাশে থাকি। ভোটের প্রচারে উন্নয়নের কথাই তুলে ধরব। আশা করছি, এবার উপনির্বাচনে রেকর্ড ভোটে জয়লাভ করব। তৃণমূল বিরোধীদের মতো শুধু ফাঁকা প্রতিশ্রুতি দেয় না। তাই এত সংখ্যায় সাধারণ মানুষ আমাদের মিছিলে এসেছিলেন।
যদিও এই মিছিলকে গুরুত্ব দিতে নারাজ বিজেপি নেতৃত্ব। জেলা বিজেপির মুখপাত্র অরূপ দাস বলেন, মানুষকে নানাভাবে প্রভাবিত করে, পুলিসের সাহায্যে ভয় দেখিয়ে মিছিলে এনেছে তৃণমূল। এই ভিড় আর বেশিদিন থাকবে না। কারণ মানুষ তৃণমূলের স্বরূপ বুঝতে শুরু করেছে। উপনির্বাচন স্বচ্ছভাবে হলে তৃণমূল জিততে পারবে না।
দুর্গাপুজোর আগে থেকেই মেদিনীপুর বিধানসভার উপনির্বাচন নিয়ে নানা পরিকল্পনা শুরু করেছিল তৃণমূল। পুজোর আগে বৈঠক, পুজোর সময় অল্পবিস্তর প্রচারও তারা করেছে। কিন্তু সেসময় বিরোধীদের তেমন তোড়জোড় দেখা যায়নি। এবার নির্বাচন কমিশন উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছে। আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখায় তৃণমূলের অনেকটাই সুবিধা হয়েছে। স্থানীয় নেতৃত্বের দাবিমতো ভূমিপুত্র প্রার্থী হতেই ঘাসফুল শিবির নতুন উদ্যমে প্রচারে ঝাঁপিয়েছে।
আগে থেকে প্রস্তুতি না নেওয়ায় বিরোধীরা বেশ সমস্যায় পড়েছে। এক বিজেপি নেতা বলেন, অনেক আগে থেকে দলের প্রস্তুতি নেওয়া উচিত ছিল। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন বেশি লোক হয়নি। জেলায় দলের হাল ধরার কেউ নেই। বুথস্তরে সংগঠন খুবই দুর্বল হয়ে পড়েছে। যাঁরা প্রথম থেকে দলের জন্য পরিশ্রম করছে, তাঁরা পিছনের সারিতে রয়েছেন। প্রার্থী নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে।
এক তৃণমূল নেতা বলেন, ভোটের আগে দলে গোষ্ঠীকোন্দল ভালোই ছিল। কিন্তু মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার মিছিলে দ্বন্দ্ব ভুলে অনেকেই অংশ নিয়েছেন। উচ্চ নেতৃত্ব সবাইকে একসঙ্গে চলার বার্তা দিয়েছেন। ভোটের লড়াইয়ে ভূমিপুত্র নামার কারণেও মিছিলে অনেক ভিড় হয়েছে। জেলাস্তরের তৃণমূল নেতৃত্বও ভাবতে পারেননি, এদিনের মিছিলে এত ভিড় হবে।