সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: ডানা ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়ল মন্দির নগরী নবদ্বীপ ও আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র মায়াপুরে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই মন্দির নগরী নবদ্বীপের রাস্তাঘাট প্রায় শুনশান হয়ে যায়। নবদ্বীপ ও মায়াপুরে পুণ্যার্থী ও পর্যটকদের আনাগোনাও ছিল খুবই কম। নবদ্বীপ ও মায়াপুরের অধিকাংশ হোটেলও ছিল প্রায় ফাঁকা। এদিন সকাল থেকে নবদ্বীপ-মায়াপুর এবং স্বরূপগঞ্জ ফেরিঘাট দিয়ে যাত্রী পারাপার অন্যান্য দিনের থেকে অনেকটাই কম। নবদ্বীপ তাঁতকাপড় হাটে বাইরে থেকে ব্যবসায়ীরা তেমন একটা আসেননি। সকাল থেকে ঝিরঝিরে বৃষ্টি হওয়ায় সমস্যায় পড়তে হয়েছে তাঁত কাপড়হাটের রাস্তায় দোকান পেতে বসা ব্যবসায়ীদের। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে মন্দিরনগরীতে লোকজন কম আসায় ভাড়া পেতে সমস্যায় পড়েন টোটো চালকরা। নবদ্বীপ ফেরিঘাটের টিকিট কাউন্টারের কর্মী কুন্দন পাল বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের খবরে লোকজন অনেক কম। এদিন বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত নবদ্বীপ ও মায়াপুরের মধ্যে প্রায় ১২শো যাত্রী নদী পারপার করেছেন। অন্যদিন এই সময় ছয় থেকে সাত হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। তবে নবদ্বীপ, মায়াপুর ও স্বরূপগঞ্জের মধ্যে কিছু যাত্রী যাতায়াত করছেন। মেঘলা আবহাওয়া রয়েছে, বৃষ্টিও হচ্ছে। যদি বেশি বৃষ্টি আর সেই সঙ্গে ঝড় হয়, তবে ফেরি পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাবে।
কোচবিহারের দিনহাটা থেকে মায়াপুর নবদ্বীপ দর্শনে পরিবার নিয়ে এসেছিলেন হরেকৃষ্ণ কুণ্ডু। তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার এসেছি। আজকে ফিরে যাচ্ছি। ঘূর্ণিঝড় হবে। ভগবানের কাছে একটাই প্রার্থনা করব মানুষের যেন কোনও ক্ষতি না হয় ।
নবদ্বীপ বড়ালঘাটের একটি লজের মালিক অখিল কুণ্ডু বলেন, অন্য দিনের তুলনায় লজে লোকই নেই। রাস্তাঘাটে এবং ফেরিঘাটে লোকজনও অনেক কম। পুণ্যার্থী ও পর্যটকদের উপর নবদ্বীপ ও মায়াপুরের হোটেল ব্যবসা নির্ভর করে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় হবে এই আশঙ্কায় আমাদের ব্যবসার ভীষণ ক্ষতি হলো। অন্যদিনের তুলনায় রাস্তায় ৭৫ শতাংশ মানুষ কম। শুধু নবদ্বীপ নয় মায়াপুরে অধিকাংশ হোটেলে লোকজন নেই। মায়াপুর হুলোর ঘাটে হোটেল ব্যবসায়ী মধুসূদন সিকদার বলেন, এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব হোটেল ব্যবসায় ভীষণভাবে পড়েছে।আমার মতো অনেকেরই হোটেলের বুকিং বাতিল হয়ে গিয়েছে।
নবদ্বীপ ফেরিঘাট এক নম্বর টোটো স্ট্যান্ড ইউনিয়নের সহ-সম্পাদক বাসুদেব দাস ও টোটো চালক পিলু সাহা বলেন, মেদিনীপুরের অনেক যাত্রীই গতকাল এবং আজ ভোরে ফিরে গিয়েছেন। ফলে ভোরের দিকে কিছু ভাড়া পেলেও সকাল থেকে বসে আছি। পর্যটকরাও নিজেদের হোটেল বন্দি করে রেখেছেন।
নবদ্বীপ তাঁতকাপড় হাটের সম্পাদক গৌরগোপাল সাহা বলেন, ডানা ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব ভালোই পড়েছে নবদ্বীপের হাটে। মূলত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার এই দুদিন হাট হয়। বর্ধমান, কুসুমগ্রাম, কাটোয়া, কেতুগ্রাম, কীর্ণাহার, নানুর এরকম বাইরে থেকেই বেশি পাইকাররা হাটে কাপড়, লুঙ্গি, গামছা, রেডিমেড জিনিস কিনতে আসে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে খুব কম সংখ্যক মানুষ হাটে এসেছেন।