নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা, অব্যাহত বিভিন্ন ঘাটে ফেরি পারাপার, সকাল থেকে মুখ ভার, দফায় দফায় বৃষ্টি
বর্তমান | ২৫ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: ঘূর্ণিঝড় ডানার প্রভাবে মুর্শিদাবাদের আবহাওয়ার ব্যাপক বদল হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আকাশের মুখ ভার। দিনভর মাঝেমধ্যে দমকা বাতাস বয়েছে। দুপুরের দিকে কয়েক পশলা বৃষ্টিতে বহরমপুর সহ জেলার নানা এলাকা ভিজেছে। কিন্তু প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে ঝুঁকি নিয়ে গঙ্গা ও ভাগীরথীতে নৌকা চলেছে। যাত্রীদের জন্য কোনও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা না নিয়েই মাঝিরা এদিন খেয়া পারাপার করেন।
বহরমপুরের রাধারঘাট নিয়াল্লিশপাড়া ঘাটে দুপুরের দিকেও খেয়া পারাপার করতে দেখা যায়। নদীতে দমকা বাতাসে একসময় যাত্রীরা আতঙ্কে চিৎকার শুরু করেন। সামশেরগঞ্জে মাঝিরা নৌকা চালানোর সময় লাইফ জ্যাকেট পরলেও যাত্রীদের সুরক্ষার কোনও ব্যবস্থা ছিল না। তবে অন্য দিনের তুলনায় কম যাত্রী নিয়ে মাঝিরা নৌকা পারাপার করেছেন।
ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার আগেই বুধবার বিকেল থেকে মুর্শিদাবাদের আবহাওয়ার ব্যাপক বদল হতে থাকে। জেলা প্রশাসন সমস্ত ফেরিঘাট বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। কিন্তু সেই নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এদিন অবাধে খেয়া পারাপার চলে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, সর্বত্র চিঠি দিয়ে নৌকা পরিষেবা বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। তারপরও কারা খেয়া নৌকা চালাল-আমরা সেবিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি।
নিয়াল্লিশপাড়ার বাসিন্দা আজমল শেখ বলেন, ভাগীরথী নদী পারাপার করে খুব সহজে বহরমপুরে যাতায়াত করা যায়। তবে এদিন মাঝনদীতে যেভাবে দমকা বাতাস দিচ্ছিল, তাতে খুব ভয় লেগেছে। ঝুঁকি নিয়ে আর এভাবে যাব না।
বহরমপুরের মহকুমা শাসক শুভঙ্কর রায় বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য আমরা আগেভাগে সতর্কতা অবলম্বন করেছি। বৃহস্পতি ও শুক্রবার মহকুমার সমস্ত ফেরিঘাট বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সকালে আমরা কয়েকটি ফেরিঘাট পরিদর্শন করেছি। তখন খেয়া পারাপার হচ্ছিল না। পরে কোথাও খেয়া পারাপার হয়েছে কিনা, আমরা টিম পাঠিয়ে তার খোঁজ নিচ্ছি। প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে নৌকা চালালে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।
বহরমপুরের পাশাপাশি জেলার অন্য প্রান্তেও একই ছবি দেখা গিয়েছে। সামশেরগঞ্জে অবাধে নৌকা পারাপার চলে। মাঝি গৌতম চৌধুরী বলেন, সকাল থেকে আবহাওয়া খারাপ। আমরা লাইফ জ্যাকেট পরে নিয়েছি। দুর্ঘটনা এড়াতে এদিন মাত্র ১০জন করে যাত্রী নিয়ে নৌকা চালিয়েছি।
স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল হাসান বলেন, উপায় নেই। তাই বাধ্য হয়ে নৌকায় যেতে হচ্ছে। নৌকা যদি না চলত, তাহলে হয়তো বিকল্প ব্যবস্থা করতাম। মাঝিরা যেমন লাইফ জ্যাকেট পরেছে, সেরকম জ্যাকেট যাত্রীদেরও দেওয়া দরকার। এই ঝড়-জলের মধ্যে যে কোনও সময় বিপদ ঘটে যেতে পারে।