সংবাদদাতা, দিনহাটা: সিতাই বিধানসভা উপ নির্বাচনে লড়তে বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা করল কংগ্রেস ও বিজেপি। মনোনয়ন জমা দিয়েই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের গলা জড়িয়ে ধরলেন কংগ্রেস প্রার্থী। সহায়তা চাইলেন বিজেপি নেতার কাছে। যদিও ‘সন্তানতুল্য’ নিশীথের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করা হয়েছে বলে দাবি করেন কং প্রার্থী হরিহর সিংহ রায়। একই কথা বলেছেন নিশীথও। অন্যদিকে, আজ শুক্রবার মনোনয়ন জমা করবেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সঙ্গীতা রায়। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, মিছিল করে এসডিও অফিসে এসে জমা করা হবে মনোনয়ন।
বিজেপির কাছে কংগ্রেসের সহায়তা চাওয়াকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। কোচবিহারের সাংসদ জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়ার দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারাতে এই রাজ্যে বিজেপি-কংগ্রেস যে কোলাকুলি করে এদিনের ঘটনাই তা প্রমাণ করল। কটাক্ষ ছুঁড়ে বলেন, নোটায় যত ভোট পড়েছে তার চেয়েও কম ভোট পাওয়া দল যত কোলাকুলিই করুক এদের জমানত জব্দ হবে।
সিতাই উপ নির্বাচনের কং প্রার্থী হরিহর সিংহ রায় বলেন, নিশীথ প্রামাণিক আমার সন্তানতুল্য। আমার ছেলের সঙ্গে পড়াশোনা করেছে। বহুদিন আমার বাড়িতে এসেছে। মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরে সৌজন্য বিনিময় করলাম। তাঁর সঙ্গে কি আলোচনা হল তা মিডিয়ার কাছে বলব না।
নিশীথ প্রামাণিক বলেন, কংগ্রেস প্রার্থী গুরুজন। বিজয়ার পরে দেখা হলে গুরুজনের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে হয়। এটাই রীতি। তাঁর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছি।
এ প্রসঙ্গে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, কেন্দ্রে বিজেপি ও কংগ্রেস লড়াই করলেও এই রাজ্যে ওরা ভাই ভাই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারাতে এদিন কোলাকুলি করেছে। ইভিএমে মানুষ ওদের যোগ্য জবাব দেবে। সাংসদ বলেন, চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহারে নোটায় পড়া ভোটের চেয়েও কম ভোট পেয়েছিল কংগ্রেস। সেই দলের প্রার্থী যাঁর কাছে সহায়তা চেয়ে কোলাকুলি করছেন তাঁদের দলেরও জমানত বাজেয়াপ্ত হবে এই উপ নির্বাচনে।
এদিন বিজেপি প্রার্থী দীপকুমার রায় মনোনয়ন দাখিল করেন। মিছিল করে এসে প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেন। প্রসঙ্গত, সিতাই আসন থেকে দীর্ঘদিন কংগ্রেস প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। ২০১১ সালে শেষ জোটের প্রার্থী হয়ে কংগ্রেস নেতা কেশব রায় জয়ী হন। পরবর্তীতে ২০১৬ সাল থেকে এই আসনে জয়ী হন তৃণমূলের জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া। গীতালদহ, ওকরাবাড়িতে একসময় কংগ্রেসের শক্তঘাঁটি থাকলেও এখন রাজ্যের শাসকদলের পাল্লা ভারী সেখানে। তাই সেখানকার ভোটাররা হাত চিহ্নের থেকে মুখ ফেরাবেন ভেবেই বিজেপির সহায়তা চেয়েছেন কং প্রার্থী, এমনই আলোচনা চলছে রাজনৈতিক মহলে।
এদিকে, আজ শুক্রবার শেষ দিনে তৃণমূল প্রার্থী মনোনয়ন জমা করবেন। প্রতিটি বুথ থেকে ৫০ জন কর্মীকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে জেলা নেতৃত্ব। ২৫টি বাইক নিয়ে কর্মীরা আসবেন এসডিও অফিসের সামনে। মনোনয়ন জমা দিতে হাজির থাকবেন জেলার শীর্ষ নেতৃত্বও। কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, সিতাইতে এবার রেকর্ড হবে। মনোনয়নের দিনেই মহামিছিলে বিরোধী সবাইকে ছাপিয়ে যাব আমরা। সেই লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিয়েছি। জেলার সব নেতাই হাজির থাকবেন মনোনয়ন জমা দিতে।
(নিশীথের সঙ্গে কোলাকুলি কংগ্রেস প্রার্থী হরিহর সিংহ রায়ের। -নিজস্ব চিত্র)