সংবাদদাতা, মেখলিগঞ্জ: ভিনরাজ্য থেকে সড়কপথে গোরু এনে কোচবিহারের সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পাচারের কথা ছিল। কিন্তু পুলিসের তৎপরতায় তা পুরোপুরি ভেস্তে গেল। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ চ্যাংরাবান্ধা বাইপাস এলাকায় একটি ট্রাক থেকে উদ্ধার হল ৪৩টি গোরু। মেখলিগঞ্জ থানার পুলিস ট্রাকটিকে আটক করেছে। সেইসঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ট্রাকচালক আবুল কালাম ও খালাসি তনবীর আলমকে। উভয়েরই বাড়ি উত্তর দিনাজপুর জেলায়।
পুলিস জানিয়েছে, পণ্যবাহী ট্রাকের মধ্যে গাদাগাদি করে গোরুগুলিকে বেঁধে রাখা হয়েছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিস জানতে পেরেছে, বিহার থেকে ট্রাকে করে গোরুগুলি সড়কপথ ধরে বাংলাদেশে পাচারের উদ্দেশ্যে সিতাই-শীতলকুচি সীমান্তবর্তী এলাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। খবরের ভিত্তিতে রাত থেকেই ওত পেতে ছিল মেখলিগঞ্জ থানার পুলিস। তারপরেই এই সাফল্য মেলে। গোরুগুলিকে বাজেয়াপ্ত করে আপাতত খোঁয়াড়ে রাখা হয়েছে। আজ, শুক্রবার ধৃত দুই যুবককে মেখলিগঞ্জ মহকুমা আদালতে তোলা হবে।
কোচবিহারের পুলিস সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, ঘটনার তদন্ত চলছে। এর পিছনে কারা জড়িত খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। মেখলিগঞ্জ থানার ওসি মণিভূষণ সরকার বলেন, গোরু পাচার রুখতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
নদীপথ, সাবেক ছিটমহল ও অন্যান্য ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য কোচবিহার জেলার সীমান্তের অনেকটা এলাকাজুড়ে এখনও কাঁটাতারের বেড়া নেই। বর্তমানে নদীর জলস্তর অনেকটাই কমে যাওয়ায় ওইসব অরক্ষিত সীমান্ত ব্যবহার করে গোরু পাচার চলছে বলে অভিযোগ। সীমান্তরক্ষী বাহিনী সূত্রেই জানা গিয়েছে, বর্তমানে গোরু পাচার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যদিও দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, বিহারের মতো ভিনরাজ্য তো বটেই নেপাল, ভুটানের মতো বিদেশ থেকে গোরু এনে ভারতের জমি ব্যবহার করে বাংলাদেশে পাচার করার চেষ্টা জারি রয়েছে দুষ্কৃতীদের। বিএসএফ সূত্রে জানানো হয়েছে, বছর কয়েক আগে আরও বেশি পরিমাণে গোরু পাচার হতো। সীমান্তে ত্রিফলা বিজলি বাতি ও কাঁটাতারের বেড়া হওয়ার সুবাদে এখন তা অনেক কমে গিয়েছে। কিন্তু পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। সীমান্ত দিয়ে গোরু পাচার প্রতিরোধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রশাসনের কাছে বিভিন্ন সময়ে আর্জিও জানিয়েছেন সীমান্তবাসীরা।