সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: জয়গাঁয় সাতবছরের বালিকা ধর্ষণ করে পুড়িয়ে খুনের ঘটনার তদন্তে বৃহস্পতিবার অকুস্থলের নমুনা সংগ্রহ করল পাঁচ সদস্যের ফরেন্সিক টিম। সঙ্গে ছিলেন জয়গাঁর অতিরিক্ত পুলিস সুপার মানবেন্দ্র দাস।
ফরেন্সিক দলের সদস্যরা দুপুরে জয়গাঁয় পৌঁছন। প্রথমেই তাঁর ঘটনাস্থল গুয়াবাড়ির নির্জন সেই মাঠে যান। মাঠটি চারদিক দেওয়াল ঘেরা। ফরেন্সিক টিম মাঠে ঢোকার পর মাঠের সামনের রাস্তাটি সাধারণ মানুষের যাতায়াতের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর দলের সদস্যরা প্রায় দু’ঘণ্টা মাঠের বিভিন্ন অংশ থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন জায়গা ঘুরে ঘুরে দলের সদস্যরা নমুনা সংগ্রহ করেছেন। যা এই ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার তদন্তে অনেকটাই সাহায্য করবে বলে মনে করছে পুলিস। দলটি চলে যাওয়ার পর মাঠে ঢোকার প্রবেশপথ সিল করে দেওয়া হয়।
এদিকে, বুধবার হেফাজতে নেওয়ার পর পুলিস ধৃত তিন অভিযুক্ত বাবলু মিয়াঁ, জয়নুল ইসলাম ও মণির হোসেনকে জেরা করে যাচ্ছে। পুলিস ওই ঘটনার পুনর্নির্মাণেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চাউমিন খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে সাতবছরের বালিকাকে বাড়ি থেকে কখন নিয়ে যাওয়া হয়, কোথায় প্রথমে নিয়ে গিয়েছিল মূল অভিযুক্ত তা জানার চেষ্টা চলছে। এই ঘটনার সঙ্গে আর কেউ জড়িত কি না, তাও পুলিস ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে জানতে চাইছে।
তদন্তে পুলিস খতিয়ে দেখছে, মূল অভিযুক্ত বাবলু মিয়াঁ শিশুটির উপর যৌন নির্যাতন চালানোর আগে থেকেই মাঠে বাকি দুই অভিযুক্ত ছিল কি না। নাকি বাকি দুই অভিযুক্ত আগে থেকেই এমন কিছু হবে জানত। ধর্ষণের পর নাবালিকাটিকে পুড়িয়ে দিতে যে দোকান থেকে অভিযুক্তরা কেরোসিন তেল কিনেছিল সেই দোকানদারকে এই ঘটনার তদন্তে সাক্ষী করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিস।
এদিকে, জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টর্সের তিন সদস্যের একটি দল এদিন জয়গাঁয় মৃত নির্যাতিতার বাড়িতে যায়। দলটিতে নেতৃত্ব দেন ডাঃ পবিত্র গোস্বামী। পরে পবিত্রবাবু বলেন, শিশুটির বাবা শয্যাশায়ী। কথা বলার অবস্থায় নেই। মা শোকাহত হলেও অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন। আমরাও চাই পুলিস সঠিকভাবে এই ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার যেন তদন্ত করে। এদিকে, জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টর্সের সদস্যরা পরে মহিলাদের একটি মিছিলেও যোগ দেন। সেই মিছিলে উই ওয়ান্ট জাস্টিস শ্লোগান ওঠে। আলিপুরদুয়ারের পুলিস সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, ওই ঘটনার তদন্তে বৃহস্পতিবার ফরেন্সিক টিম এসেছিল। তদন্ত সঠিক পথেই এগচ্ছে।