• সোনার দর পড়ায় চাঙ্গা বাজার, ধনতেরসে  গত বছরের রেকর্ড ছাপিয়ে যাওয়ার আশা
    বর্তমান | ২৫ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ধনতেরসের মুখে ক্রেতাদের মুখে হাসি ফোটাল সোনার দাম। বিগত দশ দিন ধরেই হলুদ ধাতুর দর নাগাড়ে বেড়েছে। কলকাতার বাজারে ৮০ হাজার টাকা ছুঁইছুঁই ছিল পাকা সোনা। অবশেষে বৃহস্পতিবার থামল সেই দৌড়। কমল দাম। ওয়েস্ট বেঙ্গল বুলিয়ান মার্চেন্টস অ্যান্ড জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের দেওয়ার তথ্য অনুযায়ী, বুধবার কলকাতায় ২৪ ক্যারেট বিশুদ্ধতার পাকা সোনার ১০ গ্রামের দর ছিল ৭৯ হাজার ৩৫০ টাকা। এদিন তা নেমেছে ৭৮ হাজার ৮৫০ টাকায়। ১০ গ্রাম পিছু ৪৫০ টাকা দাম কমেছে ২২ ক্যারেট গয়না সোনারও। এখন দর ৭৪ হাজার ৯৫০ টাকা। গত বছর ধনতেরসের পর অধিকাংশ ব্যবসায়ী জানিয়েছিলেন, ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বিক্রি বেড়েছে। তখন সোনার দর ৬০ হাজার টাকার আশপাশে ছিল। বর্তমানে দাম বৃদ্ধির কারণে সেই রেকর্ড ছাপিয়ে যাওয়ায় সম্ভাবনা যথেষ্ট। এদিন দাম কমে যাওয়ায় উৎসাহ বেড়েছে ক্রেতাদের মধ্যেও। আর তাতে স্পষ্ট যে, কেনাকাটার বহর আরও বাড়বে এবার। ইতিমধ্যেই ধনতেরসকে কেন্দ্র করে অগ্রিম বুকিং শুরু করে দিয়েছেন ক্রেতারা। চলছে অনলাইনে বরাত। তাই এবারের শুভক্ষণে নতুন রেকর্ড গড়তে বুক বাঁধছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা।

    সেনকো গোল্ড লিমিটেডের এমডি ও সিইও শুভঙ্কর সেনের গলাতেও সেই আশার সুর। তিনি বলেন, ‘মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্তরা কিছু না কিছু সঞ্চয় সবসময়ই করেন। সোনার গয়না বা মুদ্রা কেনাও সেই সঞ্চয়ের অঙ্গ। ফলে দাম বাড়লেও, তাঁরা সঞ্চয় করবেনই। সেক্ষেত্রে ধনতেরস তাঁদের কাছে পবিত্র ও উপযুক্ত সময়। ক্রেতাদের অনেকেই পুরনো সোনা এনে নতুন গয়না তৈরি করছেন। সোনার দাম বৃদ্ধি তাঁদের খুব একটা গায়ে লাগছে না। তাছাড়া আমরা নগদ ছাড় থেকে শুরু করে আইফোন বা গাড়ির জেতার মতো হরেক অফার দিচ্ছি। মোট কথা, ক্রেতাদের লাভবান করার সব রকম বন্দোবস্ত রাখা হচ্ছে। তা তাঁদের খুশি করছে।’ 

    এবারও ধনতেরসে যে রেকর্ড বিক্রি হবে, সেব্যাপারে কার্যত নিশ্চিত বিশিষ্ট অলঙ্কার প্রতিষ্ঠান অঞ্জলি জুয়েলার্সের ডিরেক্টর অনর্ঘ উত্তীয় চৌধুরী। তিনি আরও বলেন, ‘সোনা এমন এক ধাতু, যা শুভ কাজে ব্যবহৃত হয়, আবার অসময়ে পাশে থাকে। যে কোনও আর্থিক প্রয়োজনে একমাত্র সোনা দ্রুত বিক্রি করে নগদ টাকা পাওয়া যায়। সাধারণ ক্রেতারা ধনতেরসের জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। সমৃদ্ধির লক্ষ্যেই এদিন তাঁরা সোনা কিনে নিয়ে যান। হীরের কেনার উদ্দেশ্যও সেটাই। এক্ষেত্রে দামকে পিছনে ফেলে দেয় মানুষের আবেগ ও উৎসাহ।’ স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যনির্বাহী সভাপতি সমর দে’র কথায়, প্রায় সব দোকানই ধনতেরস উপলক্ষ্যে নানা আর্থিক ছাড় দেয়। চালু থাকে লাকি ড্র বা নিশ্চিত উপহারও। সোনার দাম বাড়লেও, ক্রেতারা এই সুযোগগুলি নেন এবং লাভবান হন। তাই এই ধনতেরসে ক্রেতাদের উৎসাহে ভাটা পড়ে না। এবারও তার অন্যথা হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)