• গোবরডাঙায় লাগাতার ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী
    বর্তমান | ২৫ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: এক কিশোরীকে লাগাতার ধর্ষণের অভিযোগ উঠল এক মধ্যবয়সির বিরুদ্ধে। বারে বারে বাধা দিলেও তাতে কর্ণপাত করত না সে। কিশোরীর বাবা-মা বাড়িতে না থাকলেই ফাঁকা বাড়িতে চলত এই নৃশংসতা। টানা ছ’মাসের বেশি সময় ধরে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে অভিযুক্ত। যার জেরে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে ওই কিশোরী। এ নিয়ে মুখ খুললে বাবা-মাকে খুন করে দেওয়ার হুমকি দিত সে। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত সুনীল রায়কে (৪৪) গ্রেপ্তার করেছে গোবরডাঙা থানার পুলিস। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে তোলা হলে পাঁচদিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

    পুলিস ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কিশোরী দশমের ছাত্রী। আগামী বছরই তার মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার কথা। পাশের পাড়ায় থাকে সুনীল। অভিযোগ, ফাঁকা বাড়ি পেলেই বিভিন্ন অছিলায় সেখানে ঢুকে কিশোরীকে জোর করে ধর্ষণ করত সে। শুধু তাই নয়, এই ঘটনার কথা পরিবারের কাউকে জানালে খুনের হুমকি দিত সুনীল। লাগাতার ধর্ষণের ফলে বছর পনেরোর ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। ভয়ে প্রথমে কিশোরী বাড়ির কাউকে না জানালেও তার শরীরে পরিবর্তন দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা। এরপর মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে সে। খাওয়া দাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। সন্দেহের বশেই পরিবারের সদস্যরা বুধবার হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে তার শারীরিক পরীক্ষা করান। তখনই ধরা পড়ে কিশোরী ছ’মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এরপরই পরিবারের তরফে অভিযোগ দায়ের করা হয় গোবরডাঙা থানায়। পুলিস তদন্ত চালিয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সুনীলকে গ্রেপ্তার করে। গোবরডাঙা থানার পুলিস জানিয়েছে, পরিবারের লোকজন এত দেরিতে কেন কিশোরীর শরীরে পরিবর্তন দেখতে পেল, তা স্পষ্ট নয়। তবে অভিযোগ পাওয়ার পরেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সুনীল জেরায় ধর্ষণের কথা স্বীকার করে নিয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী চাইল্ড লাইনে পাঠানো হবে কিশোরীকে। সেখানেই ওর সব চিকিৎসা হবে।

    এ নিয়ে কিশোরীর মা বলেন, সম্প্রতি মেয়ের শারীরিক পরিবর্তন লক্ষ্য করছিলাম। কিন্তু এই ঘটনা যে ঘটবে, বুঝতে পারিনি। ওকে বার বার জিজ্ঞাসা করেছিলাম, কে তোর সর্বনাশ করল? মেয়ে চুপ ছিল। শেষে বকুনি দিতেই সে সুনীলের কীর্তির কথা বলে। সব থেকে অবাক করার মতো বিষয় সুনীল ওর বাবার থেকেও বড়, জেঠু বলে ডাকত। আক্ষেপের সুরে তিনি বলেন, মেয়েকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল, কিন্তু সুনীল সব শেষ করে দিল। মেয়ে খুবই মেধাবী ছিল, এবার মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। সুনীলের কঠোর শাস্তি চাই। এনিয়ে বারাসত পুলিস জেলার অতিরিক্ত সুপার স্পর্শ নিলাঙ্গী বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এবার আইনানুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)