নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কেউ যেতেন দিল্লি, আবার কারও গন্তব্যস্থল আন্দামান। পাশাপাশি ১০ জনের একটি গ্রুপের যাওয়ার কথা ছিল ইম্ফল। কিন্তু বিমান পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁরা সেখানে যেতেই পারলেন না। বিমানের জন্য রাতভর অপেক্ষা করতে হল কলকাতা বিমানবন্দরে। আজ, শুক্রবার সকালে বিমান পরিষেবা স্বাভাবিক হলে বিমানে টিকিট পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে চিন্তিত যাত্রীরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কলকাতা বিমানবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, একেবারে শুনশান গোটা এলাকা। যেহেতু বিমান পরিষেবা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, তাই স্বাভাবিকভাবে অন্যদিনের মতো কর্মব্যস্ততার চেনা ছবিটা ছিল উধাও। তারমধ্যেও কয়েকজন যাত্রীর দুর্ভোগ ধরা পড়েছে। বারুইপুরের বাসিন্দা শেফালি পাল নামে এক যাত্রীর যাওয়ার কথা ছিল ডেনমার্কে মেয়ের কাছে। শেফালিদেবী ভেবেছিলেন, আবহাওয়া অনুকূল থাকবে, বিমান চলাচল করবে। কিন্তু বিমানবন্দরে এসে তিনি দেখেন, কলকাতা থেকে বিমান ছাড়বে না। তাই ব্যাগ নিয়ে দমদম ক্যান্টনমেন্টে নিকট আত্মীয়ের বাড়িতে তিনি ফিরে গিয়েছেন। আবার নতুন করে কীভাবে টিকিট কাটবেন, তা নিয়েই চিন্তিত তিনি।
দিল্লি থেকে কলকাতা হয়ে ইম্ফল যাওয়ার কথা ছিল ১০ জনের একটি গ্রুপের। দিল্লি থেকে কলকাতায় তাঁরা নির্দিষ্ট সময়েই চলে আসেন। কিন্তু কলকাতায় এসে তাঁরা জানতে পারেন ইম্ফলগামী বিমান বাতিল। এই অবস্থায় কলকাতায় কোথায় থাকবেন, তা নিয়ে উদ্বেগ ধরা পড়েছে ওই গ্রুপে থাকা এক মহিলা যাত্রীর মধ্যে। তাঁরা একটি এজেন্সির সঙ্গে কথা বলে চেষ্টা করছেন বিমান বা ট্রেনের টিকিট পাওয়া যায় কি না। বিমান যাত্রীদের এই অবস্থায় অসাধু চক্রের একদল কারবারির ‘দাপাদাপি’ লক্ষ্য করা গিয়েছে। একদল যুবক এসে ওই যাত্রীদের প্রস্তাব দিতে থাকে, দমদমে হোটেল রয়েছে, বিমানবন্দর থেকে গাড়ি করে নিয়ে যাওয়া হবে। বিভিন্নরকম প্রস্তাব আসতে থাকায় যাত্রীরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন।
অন্যদিকে আন্দামানের স্থায়ী বাসিন্দা সালমা কান্নান। তিনি দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ে গিয়েছিলেন আত্মীয়ের বাড়িতে। কিন্তু বিমান বাতিল হওয়ায় আন্দামানে তিনি যেতে পারেননি। আবার ক্যানিংয়েও ফিরে যেতে পারেননি। তিনি জানান, রাতভর কলকাতা বিমানবন্দরে থাকবেন।
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিট থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয় বিমান পরিষেবা। প্রথমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ৬টা থেকে বিমান পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হবে। কিন্তু এদিন ফের ১১টি বিমানে বোমা রাখার হুমকি আসে। তার জেরে ৬টার কিছু পরে বিমান ওঠা-নামা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ৬টা ৪৫ মিনিট নাগাদ কলকাতা থেকে শেষ বিমান রওনা হয়েছে গুয়াহাটির উদ্দেশে। আর ৬টা ১১ মিনিট নাগাদ অমৃতসর থেকে শেষ বিমান কলকাতায় অবতরণ করেছে। এদিন অন্তর্দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক মিলিয়ে সর্বমোট ৩০৯টি বিমান ওঠা-নামা করেছে। আজ, সকাল ৯টা থেকে বিমান পরিষেবা স্বাভাবিক হওয়ার কথা রয়েছে।